নাছির আহম্মেদ আলী, শরীয়তপুর প্রতিনিধি : গোসাইরহাট উপজেলার কুচাইপট্ট্ িইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বিরোদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় চাউল বিতরনে অনিয়মের অভিযোগ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ মিথ্যা অভিযোগে মামলা দায়ের করা ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবী করে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি ঘটনার পুনঃতদন্ত দাবী করেছেন কুচাইপট্রি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন স্বপন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য কুচাইপট্রি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন স্বপন বলেন, গোসাইরহাট উপজেলার কুচাইপট্টি ইউনিয়নের ৬৯২ জন জেলেদের জন্য ভিজিএফ বরাদ্দকৃত চাল গত ২৫ এপ্রিল গোডাউন থেকে উত্তোলন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে কুচাইপট্রি ইউনিয়ন পরিষদের ভবনের নিচতলা রেখে দেয়।
২৬ এপিল থেকে ট্যাগ অফিসার গোসাইরহাট উপজেলা দারিদ্র বিমোচন কর্মকর্তা গোপাল চন্দ্র দাস উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এম মাহবুবুল হক উপস্থিতিতে স্টক বুঝে দিয়ে সকাল ৮টায় বিতরন কাজ শুরু করেন। বিতরন চলাকালীন সময়ে তালিকাভুক্ত কার্ডধারী ছাড়া ও স্মার্ট কার্ডসহ অন্যান্য জেলেদেরকে নিয়ে কুচাইপট্রি ইউনিয়ন পরিষদের পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল বাশার মুন্সির সংঘবদ্ধ স›ত্রাসী গ্রুপের সর্দার মোস্তাফিজ সরদারের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন যুবক বিতরনী স্থানে হাজির হয়ে হৈচৈ শুরু করে।
তারা স্মার্ট কার্ডধারীদের সকলকে চাল দেয়ার জন্য চেয়ারম্যানকে চাপ প্রয়োগ করে। ঐ ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে মাত্র ৬৯২জনকে। ঐ ইউনিয়নে জেলে রয়েছে প্রায় ৩ হাজার। এ পরিস্থিতিতে দুপুর ১২টায় চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন স্বপন অসহায় হয়ে পড়েন। এমন সময় প্রতিপক্ষের লোকজনের মিথ্যা অভিযোগ দেয় প্রশাসনের কাছে। এরপর গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসাইন ও গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোল্যা সোহেব আলী হাজির ঘটনাস্থালে যান।”স্মার্ট কার্ডধারীদের” থেকে চাল বিতরনের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা চাল না পেয়ে নানা রকম বিভ্রান্তিকর মিথ্যা তথ্য দেয়। এ সময় নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ দেখে কিছু কার্ডধারী ভয়ে স্থান ত্যাগ করে।
তাদের নামীয় অবিতরনকৃত অবশিষ্ট ৫৩ বস্তা (১৫৯০কেজি) চাল তারা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জব্দ করে বিতরনী স্থান থেকে ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোফাচ্ছেল হোসেন কে আটক করে নিয়ে যায়। পরে গোসাইরহাট থানায় একটি সাধারন ডাইরী করে। পরদিন ২৭ এপ্রিল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে মিথ্যা অভিযোগে কুচাইপট্রি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন স্বপন, ৩নং ওয়ার্ড মেম্বার মোফাচ্ছেল হোসেন ও ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার শামীম বেপারীকে আসামী করে গোসাইরহাট উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কমৃকর্তা এম মাহবুবুল হক বাদী হয়ে ফৌজদারী কার্যবিধি ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছে। উক্ত মামলায় মেম্বার মোফাচ্ছেল হোসেন জেল হাজতে রয়েছে। এ ঘটনার পর কুচাইপট্রি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন স্বপন গত ৫ মে সকাল ১০টায় শরীয়তপুরে পালং উত্তর বাজারে শরীয়তপুর জেলা সাংবাদিক কল্যাণ সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন।
এ সময় তিনি তার বিরুদ্ধে অনীত মিথ্যা মামলার পুনঃতদন্ত দাবী করেন চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন স্বপন। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন স্বপন জেলা প্রশাসক বরাবর পুনঃ তদন্তের জন্য একটি লিখিত আবেদন করেছেন। তিনি দাবী করেন জেলেদের চাল নিয়মনীতি অনুযায়ী ৪০ কেজি করে বিতরন করা হয়েছে। যাদের চাল বিতরন বাকি ছিল ঐ চাল জব্দ করা হযেছে। এ ঘটনায় তিনি নির্দোষ দাবী করেন। এ সময় অন্যন্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কুচাইপট্রি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন স্বপন,ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন গাজি, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শাহজাহান মাল, আবুল ফজল সরদার ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নুরুল হক গাজি ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য রোস্তম সরদারসহ অনেকে।
এ ব্যাপারে পশ্চিম চর বিশকাঠালী গ্রামের তালিকাভুক্ত জেলে নাজমূল পেদা বলেন, আমি একজন জেলে। আমার নামে বরাদ্দকৃত ৪০ কেজি চাল আমাকে দিয়েছে। আমাকে চাল কম দেয়নি।
কার্ডধারী জেলে আঃ রহিম বেপারী বলেন, এপ্রিল মাসের ভিজিএফ মাল আনতে গেলে হৈচৈ দেখে চলে আসছি। মাল আনতে পারিনি। তবে এর পূর্বেও মাসে আমাকে ৪০ কেজি চাল দিয়েছে।
কার্ডধারী জেলে জসিম পেদা বলেন, মার্চ মাসে আমাকে ৪০ কেজি চাল দিয়েছে। এই মাসের মাল আনতে গেলে গন্ডগোল দেখে আমি পুলিশের ভয়ে সরে আসি।পরে শুনলাম মাল দেয়া বন্ধ।