১৯, এপ্রিল, ২০২৪, শুক্রবার
     

‘অশনি’র প্রভাবে অতি ভারী বৃষ্টির শঙ্কা

প্রবল বেগে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’। এটি রোববার রাত থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অনেকটাই প্রবল বেগে উপকূলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু সন্ধ্যার পর গতি কিছুটা কমে যায়। যতই উপকূলের কাছাকাছি হবে ততই এর গতি আরও কমতে পারে।

মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ এর অগ্রভাগ পৌঁছাতে পারে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তমে। ওড়িশার দিকেও ঘোরার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে যেদিকেই যাক না কেন, স্থলভাগে এটি আর ঘূর্ণিঝড় আকারে উঠছে না-সেটি বলছেন আবহাওয়াবিদরা।

তারা মনে করেন, অশনির সমাধি ঘটবে সাগরেই। আর গভীর নিম্নচাপ আকারে তা স্থলভাগে উঠবে। এতে ভারতের অন্ধ্র, ওড়িশা আর পশ্চিমবঙ্গে প্রচুর বৃষ্টি হবে।

বাংলাদেশের সুন্দরবনসহ মোংলা, খুলনা, সাতক্ষীরায় বাতাসের ঝাপটা আর ঢেউয়ের ধাক্কা লাগতে পারে। তবে সেটা বড় আকারের কিছু নয়। বাংলাদেশেও অশনির থেকে কিছু বৃষ্টি পাবে। বিশেষ করে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সাগরের ঢেউয়ের বড় অংশ এবারও সুন্দরবন মোকাবিলা করবে।

এদিকে অশনির প্রকোপ না পড়লেও বাংলাদেশ সরকার সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিয়েছে। ইতোমধ্যে উপকূলে স্বেচ্ছাসেবীরা মাইকিং করেছেন। ঘূর্ণিঝড়ের খবরে সাতক্ষীরা ও খুলনার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। কেননা সিডর-আইলা আর ইয়াসের মতো ঘূর্ণিঝড়ের দগদগে ক্ষত এখনো ওইসব এলাকায় জ্বলজ্বলে। ফলে নতুন ঘূর্ণিঝড়ে আরও বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় তারা উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়েছেন।

ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রাসমুদ্রকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকাকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। উপকূলের দিকে রওনা হয়েছে শত শত মাছ ধরা ট্রলার। নোয়াখালীর হাতিয়ার সঙ্গে সারা দেশের নৌ যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি) জানায়, রোববার রাতে অশনির গতি ছিল ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার। পরে সোমবার দুপুর পর্যন্ত এটি ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার করে আগায়। রোববারই এটি ব্যাপক শক্তি সঞ্চয় করেছিল। যে কারণে ধীরে ধীরে এটি বিধ্বংসী হয়ে ওঠে। আন্দামান সাগরের কাছে এটি গভীর নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়।

সোমবার সকালে এর কেন্দ্রের গতি ছিল ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত। পরে তা সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১১৭ কিলোমিটার ছিল। শক্তি বৃদ্ধি পাওয়ায় তা তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছিল। তবে এরপর ঝড়ের গতি ও শক্তি কমতে শুরু করে। উপক‚লের কাছে পৌঁছানোর আগে আরও শক্তি ক্ষয় হবে ‘অশনি’র। এতে এটি অন্ধ্র উপকূলে সাধারণ ঘূর্ণিঝড়রূপে পৌঁছাতে পারে। তখন এর বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ৭৫ থেকে ৯৫ কিলোমিটার।

আবহাওয়াবিদরা বলেন, মঙ্গলবার সারাদিন সাধারণ ঘূর্ণিঝড় আকারেই থাকতে পারে এটি। কাল রাতে পরিণত হতে পারে গভীর নিম্নচাপে, যার প্রক্রিয়া শুরু হবে বেলা ১২টার পরে। ওড়িশার দিকে যাওয়ার আশঙ্কা করা হলেও আবহাওয়াসংক্রান্ত ওয়েবসাইট উইন্ডডটকমের মডেল বলছে, এটি বিশাখাপত্তম দিয়ে স্থলভাগে উঠতে পারে।

               

সর্বশেষ নিউজ