উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে ফয়জুল্লাহ জালাল নামে একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককে আটক করেছিল তালেবান। চার দিন আটক রাখার পর এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রফেসরকে ছেড়ে দিয়েছে তালেবান।
মুক্তির পর ‘রেডিও ফ্রি আফগানিস্তান’-এর সঙ্গে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন অধ্যাপক ফয়জুল্লাহ জালাল। এই সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, তালেবান তার সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করেছে, অতিথির মতো আপ্যায়ন করেছে।
এর আগে গত রোববার তালেবানের সশস্ত্র গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যরা ফয়জুল্লাহ জালালকে আটক করে নিয়ে যান। এই শিক্ষক যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত আশরাফ গনি সরকারের পতনের পরও প্রায়ই টেলিভিশনে হাজির হয়ে তালেবান শাসনের সমালোচনা করে থাকেন। দেশটিতে বর্তমান যে গভীর অর্থনৈতিক সংকট চলছে, তার জন্য তিনি তালেবানকে দায়ী করেন।
আটক থেকে মুক্তির পর ফয়জুল্লাহ জালাল বলেন, তারা আমার সঙ্গে খুব ভালো ব্যবহার করেছে। তাদের কাছে থাকার সময় আমার মনেই হয়নি যে, কারাগারে আছি কিংবা আটক আছি।
কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা শিক্ষক আরও বলেন, যেখানে তাকে রাখা হয়েছিল, সেখানকার অধিকাংশ তালেবান সদস্য শিক্ষিত এবং তার সঙ্গে অতিথির মতো আচরণ করা হয়েছে। অধ্যাপক ফয়জুল্লাহ জালাল বলেন, এমনকি তালেবান সদস্যরা আমাকে সত্য বলা থামাতে বলেননি। তারা আমাকে বলেছেন, তারা বাকস্বাধীনতার বিরোধিতা করেন না। তবে কথা বলতে হবে ইসলামিক পদ্ধতিতে, পশ্চিমা ধাচে নয়।
কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার এবং অধ্যাপক হওয়ার কারণে তারা আমাকে সম্মান করেছে।
খবর থেকে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ফয়জুল্লাহ জালাল সম্প্রতি তালেবানের অন্যতম মুখপাত্র মোহাম্মদ নাইমকে ‘বাছুর’ বলে অভিহিত করেন। এ ছাড়া তালেবান জোরপূর্বক আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা (তালেবান) দেশের মানুষকে ‘গাধা’ মনে করে।
কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষককে গ্রেফতারের পর তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা প্রফেসর পদ ব্যবহার করে কেউ যেন অন্য মানুষদের অসম্মান এবং বাজে পোস্ট না দিতে পারে, সে জন্য তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ফয়জুল্লাহ জালালকে ‘একজন চরমপন্থি’ হিসেবেও উল্লেখ করেন মুজাহিদ।