২০, এপ্রিল, ২০২৪, শনিবার
     

শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই আগামী নির্বাচন চায় সাম্যবাদী দল

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সংলাপে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকারের মাধ্যমে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন চেয়েছে বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল।

নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে মঙ্গলবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নিয়ে এ প্রস্তাব দেয় দলটি। বিকাল সাড়ে ৫টায় দীলিপ বড়ুয়ার নেতৃত্বে দলের ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে প্রবেশ করে।

সংলাপ শেষে বের হয়ে সাংবাদিকদের একথা জানিয়েছেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দীলিপ বড়ুয়া।

সংলাপে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে রাষ্ট্রপতিকে কী প্রস্তাব দিয়েছেন- সে বিষয়ে জানতে চাইলে দীলিপ বড়ুয়া বলেন, ‘আমরা মহানাম্য রাষ্ট্রপতিকে বলেছি, বর্তমান বাস্তবতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শাসনতন্ত্র মোতাবেক নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা বাস্তবসম্মত। সেই সরকার সংবিধান অনুসারেই গঠিত হবে অথবা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী অতীতে যে নির্বাচনকালীন একটি সরকার গঠন করেছিলেন, সে রকমও হতে পারে।’

সংবিধানে তো নির্বাচনকালীন সরকার বলে কিছু নেই- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এর আগে তো প্রধানমন্ত্রী বিএনপিকে অফার (প্রস্তাব) দিয়েছিলেন নির্বাচনী সরকারে আসতে। বিএনপি আসেনি। সেটা তো সরকারের ইচ্ছার বিষয়।’

২০ ডিসেম্বর প্রথম দিনে জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংলাপ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ২২ ডিসেম্বর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। ইতোমধ্যেই ১৬টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শেষ করেছেন তিনি। আরও ৯টি দলের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপের দিনক্ষণ চূড়ান্ত রয়েছে।

এর আগে নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। রাষ্ট্রপতিকে সিইসি এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। গত কয়েকটি মেয়াদে রাষ্ট্রপতি ‘সার্চ কমিটি’র সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। বর্তমান ইসির পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি। এ সময়ের মধ্যেই রাষ্ট্রপতি নতুন কমিশন গঠন করবেন, যাদের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

এদিকে জাতীয় সংসদে ব্যবসায়ীদের সদস্য (এমপি) হওয়া ঠেকাতে আইন চেয়েছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে এ বিষয়ে উদ্যোগী হওয়ার অনুরোধ করেছে দীলিপ বড়ুয়ার দলটি। রাষ্ট্রপতি বিষয়টি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে তাদের জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি বলেছেন- ব্যবসায়ীদের দ্বারা সংসদ নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। সে বক্তব্য তিনি সংসদেও অতীতে দিয়েছেন। তখন আমরা বলেছি যে এ ব্যাপারে একটি আইন করা উচিত। যাতে ব্যবসায়ীদের দ্বারা রাজনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট না হয়।’

রাষ্ট্রপতি কি এ আইন করতে পারবেন- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে দীলিপ বড়ুয়া বলেন, ‘এ আইন করতে তিনি যেখানে বলার সেখানে বলবেন।’

রাষ্ট্রপতি আপনাদের দাবির প্রেক্ষিতে কী বলেছেন- এ প্রশ্নের উত্তরে দীলিপ বড়ুয়া বলেন, ‘উনি বলেছেন, উনার যা ক্ষমতা আছে, তার মধ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট সব ক্ষমতার সঙ্গে উনি আলাপ করবেন।’

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদে ব্যবসায়ী ছিলেন ১৫ শতাংশ। এরপর থেকেই সংসদে ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্বের হার ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। ১৯৯৬ সালে ব্যবসায়ী এমপির হার বেড়ে দাঁড়ায় ৪৮ শতাংশে। ২০০১ সালে হয় ৫১ শতাংশ, ২০০৮ সালে ৬৩ শতাংশ, ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদে ৫৯ শতাংশ এবং সর্বশেষ ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৮২ জন ব্যবসায়ী এমপি নির্বাচিত হন। সে হিসাবে সংসদে ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্বের হার ৬১ দশমিক ৭ শতাংশ। অর্থাৎ জাতীয় সংসদে অর্ধেকেরও বেশি এমপি হলেন ব্যবসায়ী।

               

সর্বশেষ নিউজ