বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট ও ঝুঁকি মোকাবিলায় বিশ্ব নেতাদের কাছে ৪টি পরামর্শ তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উদ্যোগে শুরু হওয়া দুদিনব্যাপী জলবায়ুবিষয়ক বাইডেন’স লিডারস সামিট অন ক্লাইমেট-এর ভার্চ্যুয়াল সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা এসব পরামর্শ তুলে ধরেন। একইসঙ্গে জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় সমন্বিত উগ্যোগ গ্রহণেরও আহ্বান জানান তিনি।
জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে নিজেদের বৈশ্বিক নেতৃত্ব পুনরায় জোরদার করার লক্ষ্যে আয়োজিত এ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিশ্বের ৪০ জন রাষ্ট্রপ্রধানকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
শেখ হাসিনার ৪ পরামর্শের মধ্যে অন্যতম হলো-
প্রথমত, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখতে উন্নত দেশগুলোকে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে অবিলম্বে একটি উচ্চাভিলাষী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার তহবিলের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চিত করতে হবে, যা অভিযোজন ও প্রশমনের মধ্যে ৫০:৫০ ভারসাম্য বজায় রাখবে।
তৃতীয়ত, প্রধান অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি খাতগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উদ্ভাবনের পাশাপাশি জলবায়ু অর্থায়নের জন্য বিশেষভাবে ছাড় দিতে হবে।
চতুর্থত, সবুজ অর্থনীতি ও কার্বন প্রশমন প্রযুক্তির ওপর গুরুত্ব দেওয়া এবং এ লক্ষ্যে দেশগুলোর মধ্যে প্রযুক্তির বিনিময়ের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
এর আগে ধারণকৃত ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মহামারি আমাদের আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে, বৈশ্বিক সমস্যা নিরসনে সব দেশের সমন্বিত উদ্যোগ অত্যন্ত প্রয়োজন।’
প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফিরে আসায় এবং জলবায় শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন ও এই আয়োজনে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোয় বাইডেনের প্রশংসা করে তাঁকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।
এসময় তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে জলবায়ুর সংকট নিরসনে বাংলাদেশের আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, ‘জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ ও সীমিত সম্পদের দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ অভিযোজন ও প্রশমনের ক্ষেত্রে বিশ্ব নেতৃত্ব হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে রোহিঙ্গা সমস্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। তারা দেশের প্রতিবেশকে অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।’
বাংলাদেশ ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন (এনডিসি) বৃদ্ধিতে এবং জলবায়ুর পরিবর্তন সহনীয় টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে কার্বন হ্রাসের পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও ভাষণে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস উপস্থিত ছিলেন।