২২, ডিসেম্বর, ২০২৪, রোববার
     

ভারতে বিয়ে ও উত্তরাধিকার বিষয়ে নতুন আইন : মুসলিমদের ক্ষোভ

ভারতে সব নাগরিকের জন্য একটি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বা ইউনিফর্ম সিভিল কোড বাস্তবায়নের কথাবার্তা উঠেছে।

এ রকম কোনো আইন হলে বিয়ে, বিচ্ছেদ, বা সম্পত্তির উত্তরাধিকারের মতো বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে ভারতের বিভিন্ন সম্পদ্রায়ের মানুষেরা নিজ নিজ ধর্ম অনুযায়ী যে ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তিগত আইন অনুসরণ করেন, তা আর থাকবে না।

এ কারণে শুরু থেকেই এতে প্রধান বাধা আসছে ধর্মের দিক থেকে। ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু ও প্রধান সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠী উভয়েই এর তীব্র বিরোধিতা করে আসছেন।

অন্যদিকে ভারতের যেসব রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আছে, যেমন – উত্তর প্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশ – সেখানে ইউসিসি নিয়ে আলোচনা ক্রমশই জোরালো হচ্ছে।

ইউনিফর্ম সিভিল কোড বিষয়ে ২০১৬ সালে ভারতের আইন কমিশন একটি জনমত যাচাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু করার পরেই এর তীব্র প্রতিবাদ হয়েছিল।

কমিশনের চেয়ারম্যান জাস্টিস বি এস চৌহান তাদের ওয়েবসাইটে চার পাতার একটি প্রশ্নপত্র আপলোড করেছিলেন। যাতে বলা হয়, দেশে সামাজিক অন্যায়গুলো দূর করার জন্য একটি ইউনিফর্ম সিভিল কোড প্রণয়ন করা যায় কি না, সেই লক্ষ্যেই তাদের এই উদ্যোগ।

প্রশ্নপত্রে মুসলিমদের মধ্যে তিন তালাকের প্রথা পুরোপুরি রদ করা, বহাল রাখা কিংবা তাতে সংশোধনী আনার ব্যাপারে মানুষের রায় কী জানতে চাওয়া হয়।

ভারতের প্রায় সব প্রধান ধর্মের বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয় নিয়েই জাতীয় আইন কমিশন মতামত আহ্বান করে। মুসলিমদের তালাক ছাড়াও, খ্রিস্টানদের বিবাহবিচ্ছেদ চূড়ান্ত করার আগে দু‘বছর অপেক্ষা করা, হিন্দু সমাজের কিছু অংশে বহুবিবাহের মতো যে পদ্ধতি চালু আছে, অথবা হিন্দু মেয়েদের পৈতৃক সম্পত্তির উত্তরাধিকার পাওয়া সহজ করতে আইন পরিবর্তন করা উচিত কিনা – এসব নানা বিষয়ে মতামত আহ্বান করা হয়।

কিন্তু ভারতের মুসলিম সমাজের সবচেয়ে প্রভাবশালী সংগঠন মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড এই জনমত যাচাই নিয়ে তীব্র আপত্তি জানায়।

ভারতের মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড এই প্রক্রিয়া বয়কটের আহ্বান জানিয়ে অভিযোগ করে, ইউনিফর্ম সিভিল কোড প্রণয়নের নামে আইন কমিশন আসলে বিজেপি সরকারের গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছে।

বোর্ডের সদস্য হজরত মওলানা ওয়ালি রহমানি দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, বহু ধর্ম, বহু মতের দেশ ভারতে ইউনিফর্ম সিভিল কোড কখনো প্রযোজ্য হতে পারে না।

বিবাহ, বিবাহ-বিচ্ছেদ, সম্পত্তি বা উত্তরাধিকারের মতো বিষয়গুলো বিভিন্ন ধর্মের ‘পার্সোনাল আইনে’র মধ্যে পড়ে এবং সেখানে আইন কমিশন নাক গলাতে পারে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে কয়েক হাজার ইমাম এক সমাবেশ করে বলেন, মুসলিম পারিবারিক আইনের বদলে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি তারা কোনোমতেই মেনে নেবেন না।

সূত্র : বিবিসি

               

সর্বশেষ নিউজ