প্রযুক্তিবিদ, বৈজ্ঞানিক ও গবেষকদের অভিনব পরিকল্পনা বিশ্ববাসীকে নানা বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
প্রযুক্তি এখন এতটাই এগিয়েছে যে, ভূমিকম্প, বন্যা বা অন্য কোনো বিপর্যয়ের সময় ড্রোন ও রোবটের মাধ্যমে বিপর্যস্তদের উদ্ধার করা হয়।
এমনকি ভূমিকম্পের সময় বহুতল বাড়িকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে অনেক যন্ত্রও আবিষ্কার করা হয়েছে, যেগুলো প্রয়োগের মাধ্যমে কম্পনের তীব্রতা এতটাই কম অনুভূত হবে যে বহুতলগুলো ভেঙে পড়ার কোনো আশঙ্কাই থাকবে না।
সম্প্রতি বন্যার হাত থেকে বাঁচার জন্যেও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে জাপানের একটি সংস্থা। ‘ইচিজো কোমুতেন’ নামে আবাসন নির্মাণকারী সংস্থা প্রধানত বন্যাপ্রবণ এলাকার জন্য এক বিশেষ ধরনের বাড়ি তৈরি করছে।
বন্যার সময় পানি প্রবাহ শুরু হলে এই বাড়ির ভেতরে পানি ঢুকতে পারবে না। বরং পানির ওপরেই ভেসে থাকবে বাড়ি।
খবরটি প্রকাশ্যে আসার পর সবার কৌতূহল বেড়ে যায়। অনেকে গুজব ভাবলেও এক আমেরিকান টেলিভিশন চ্যানেল থেকে সংস্থার কর্মীদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়।
বাড়িটি কিভাবে ভেসে থাকবে, তাও ভিডিওর মাধ্যমে দেখানো হয়। মাটির ওপরে পানিস্তর একটি নির্দিষ্ট উচ্চতা পর্যন্ত পৌঁছলে বাড়িটিও ধীরে ধীরে ওপরের দিকে ভেসে উঠবে।
বাড়িটি মাটির তলায় লোহার রডের সাথে কেবল দিয়ে আটকানো অবস্থায় থাকে।
পানির ওপর প্রায় পাঁচ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত বাড়িটি ভেসে উঠতে পারে।
পানির কমে যাওয়ার সাথে সাথে বাড়িটি আবার মাটিতে নেমে আসবে।
যত রকমের বৈদ্যুতিক সংযোগ তা বাড়ির ওপরের দিকেই থাকবে, যাতে ভেসে ওঠার সময় পানির সংস্পর্শে এসে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
সারা পৃথিবীতে দক্ষিণ এবং পূর্ব এশিয়া সবচেয়ে বেশি বন্যাপ্রবণ। বহু মানুষকে এই কারণে বাড়িছাড়া হতে হয়েছে।
বিশেষত বাংলাদেশ, ভারত, চীনে প্রায়ই বন্যার বিভীষিকাময় রূপ ফুটে ওঠে। এই ‘ফ্লোটিং হোম’ আবিষ্কারের ফলে শুধু প্রযুক্তিগত উন্নতিই হয়নি, এর ফলে বন্যার ভয়াবহতা থেকে রক্ষাও পাবে বন্যাপ্রবণ এলাকার অধিবাসীরা।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা