অনলাইন বেচাকেনার প্লাটফর্ম ই-অরেঞ্জের পৃষ্ঠপোষক বরখাস্ত হওয়া বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানার বিরুদ্ধে গ্রাহকের সাড়ে ২৮ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
ই-কমার্সের আড়ালে এমএলএম কোম্পানি খুলে সাধারণ গ্রাহকদের ওই টাকা নিজ ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের নামে পরিচালিত ৬টি ব্যাংকের ৩১টি হিসাবে জমার পর তা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
সোমবার অর্থ আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিং আইনে সোহেল রানার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক। শিগগিরই অনুসন্ধান কর্মকর্তা উপপরিচালক মো. মোনায়েম হোসেন মামলাটি করবেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আরিফ সাদেক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, সোহেল রানার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মধ্যে ই-কমার্স গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ, বিদেশে পাচারসহ নানা অভিযোগের অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধান শেষে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কমিশনে প্রতিবেদন জমা দেন।
এতে বলা হয়েছে, সোহেল রানা নিজের পদ-পদবি আড়াল করে দুর্নীতি সম্পৃক্ত অপরাধে ই-অরেঞ্জ নামীয় এমএলএম কোম্পানি খোলেন। এরপর প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ গ্রাহকদের কাছ থেকে বেশি লাভের প্রলোভন দেখিয়ে তার নিজ নামে ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের নামে পরিচালিত ৬টি ব্যাংকের ৩১ হিসাবে মোট ২৮ কোটি ৪৯ লাখ ৩৭ হাজার ৬৫০ টাকা জমা করেন। যার মধ্যে ২৮ কোটি ৪৬ লাখ ৭২ হাজার ৯১৩ টাকা উত্তোলন করেছেন। যে কারণে তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারা, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় মামলা অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।
এর আগে ১৬ মার্চ ই-অরেঞ্জের পৃষ্ঠপোষক ও বরখাস্ত হওয়া বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানার অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে তদারককারী কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
সম্প্রতি সোহেল রানা ভারতে গ্রেফতার হলেও তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। আটক হওয়ার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অপরাধমূলক একাধিক কাজে নিজের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন বিএসএফের কর্মকর্তারা।