ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটা যাত্রীরা মঙ্গলবার থেকে রাজধানী ছাড়া শুরু করেছেন। নাড়ির টানে ছোটা যাত্রীদের মধ্যে ছিল আনন্দের হাসি। তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে, অনলাইনে চেষ্টা করে ট্রেনের টিকিট কেটেছেন।
কমলাপুর থেকে মঙ্গলবার কয়েকটি ট্রেন ১৫ মিনিট থেকে ২ ঘণ্টা পর্যন্ত বিলম্বে ছেড়ে গেছে। বিষয়টিকে স্বাভাবিক মেনে যাত্রীরা বলেন, অল্প দেরি দুর্ভোগের নয়। ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে, এটাই আনন্দের। প্রথম দিন সকালে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলোয় চোখে পড়ার মতো ভিড় ছিল না। কিন্তু দুপুরের পর ছেড়ে যাওয়া একেকটি ট্রেনে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না।
ঢাকা রেলওয়ে বিভাগীয় বাণিজ্যিক দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ঈদ উপলক্ষ্যে প্রতিদিন প্রায় ৩৩ হাজার যাত্রী কমিউটার এবং আন্তঃনগর ট্রেনে কমলাপুর থেকে যাচ্ছেন। প্রথম দিন সকালের ট্রেনগুলোয় ভিড় কম ছিল। দুপুরের পর থেকে ভিড় বাড়তে থাকে। ঈদ উপলক্ষ্যে কমলাপুর থেকে ৩৮ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করছে। এসব ট্রেনে ২৭ হাজার ৮৮১টি টিকিট ১ থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত অগ্রিম বিক্রি হয়েছে। ৩ থেকে ৫ জুলাই আরও প্রায় এক হাজার ১০০ নতুন টিকিট যুক্ত হয়েছে।
কথা হয় ট্রেনের একজন খাবার সরবরাহকারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতিবছর এই দিনে ব্যাপক চাপ থাকে। আমরা খাবার নিয়ে যাত্রীদের কাছে যেতে পারি না। কিন্তু এই ঈদে হঠাৎ ফাঁকা। তবে বৃহস্পতি ও শুক্রবার চাপ বাড়বে। ঈদযাত্রা নিয়ে জানতে চাইলে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, সিটের অতিরিক্ত যাত্রী বহন আমরা এবার কিছুটা কমিয়ে দিয়েছি। ১ নম্বর গেটেও আমাদের টিকিট কর্মকর্তারা তৎপর রয়েছেন। আপনারা দেখবেন তারা টিকিট ছাড়া স্টেশনের ভেতরে কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না।
কমলাপুর থেকে মঙ্গলবার চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও এক ঘণ্টা বিলম্বে ৭টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে যায়। আর খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ৭টা ১৫ মিনিটে যাওয়ার কথা থাকলেও ৯টা ৩৬ মিনিটে ছাড়ে।
চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের ট্রেনগুলো নির্দিষ্ট সময়ে ছেড়ে গেছে। এদিকে কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনের ছাদে উঠে কিছু যাত্রী ভ্রমণ করতে দেখা গেছে। রেলওয়ে পুলিশ বলছে, একশ্রেণির লোক স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার পর চলন্ত অবস্থায় ট্রেনে উঠে সোজা ছাদে উঠে পড়ে। ওই অবস্থায় এদের নামানোও যায় না, চরম ঝুঁকি থাকে। গত শনিবার কাটা অগ্রিম টিকিটধারী যাত্রীরা আজ ট্রেনে ভ্রমণ করবেন।