ঈদের পরদিন সোমবার (১১ জুলাই) প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়। ঈদের আগের দিনও যার দাম ছিল ১১০ থেকে ১২০ টাকা। মাত্র এক দিনের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। একই অবস্থা হচ্ছে সালাদ আইটেম শসার বেলায়ও। তবে দাম স্থির নেই। যে শসা বিক্রি হয়েছে ৫০-৬০ টাকা কেজিতে, তা ঈদের দোহাই দিয়ে আজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। এমনকি, আরও বাড়ার সম্ভাবনা আছে।
কোরবানির ঈদের কয়েকদিন সবার খাদ্য তালিকায় থাকে মাংস। মাংস খাওয়ার অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে সালাদ। আর সালাদ তৈরির উপকরণ শসা, টমেটো, গাজর ও কাঁচা মরিচ। ঈদের পরের দিনের কাঁচাবাজারে তাই প্রভাব পড়েছে সালাদের এসব আইটেমে।
কাঁচা মরিচ শসারাজধানীর হাতিরপুল ও নিউমার্কেট কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে শসা ও কাঁচা মরিচের। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে টমেটো ও গাজরের দাম। ক্রেতারা সালাদের পণ্য কিনতে এসে বলছেন, আকাশছোঁয়া দাম। আর বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের ছুটিতে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দামের এই অবস্থা।
এদিন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৪০ টাকা। একই অবস্থা শসা, টমেটোর ক্ষেত্রেও। শসা ১২০- ১৩০, টমেটো ১৫০-১৬০, গাজরের দাম ১২০-১৩০ টাকা প্রতি কেজি।
হাতিরপুল বাজারে কথা হয় ব্যাংক কর্মকর্তা ফখরুল মিলনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘শসা ১৪০, টমেটো ১৫০, কাঁচা মরিচের কেজি ২৪০ টাকা! দেশে কি দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে?
পাশের সবজি বিক্রেতা মনিরুল জবাব দেন, ‘ঈদের ছুটির কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কম। গাড়ি বন্ধ, আসতে পারছে না। তাই দাম বাড়তি, আমরা কী করবো?’
ব্যাংকার মিলন বলেন, খুচরা ব্যবসায়ীদের এরকম অজুহাত আমরা প্রতি ঈদের পরদিনই শুনি। আসলে ঈদের কথা বলে জিনিসের দাম বাড়ানো এটা ওদের একটা টেকনিক।
একই কথা বললেন বেসরকারি চাকরিজীবী আরেক ক্রেতা। তারেক নামের এই ক্রেতা বলেন, সব ধরনের সবজির দামই বাড়তি। বাজার করাই কঠিন হয়ে পড়ছে দিন দিন।
নিউমার্কেটের সবজি বিক্রেতা সবুজ মিয়া বলেন, ঈদের দিন রাতে মাত্র এক ট্রাক মাল এসেছে। অনেক সবজির চাহিদা, সে তুলনায় মালামাল কম। তাই সব সবজির দাম বেশি। তবে দুই-তিন দিনের মধ্যে সব সবজির দাম কমে আসবে বলে আশাবাদী এই ব্যবসায়ী।
কাঁচা মরিচ, শসা, টমেটো এবং গাজরের মতো দাম দ্বিগুণ না বাড়লেও বাজারে অন্য সব সবজির দামও বেড়েছে। সব সবজিই কেজিতে ১০/২০ টাকা করে বেড়েছে। করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি, পেঁপে ৩০, ঢেঁড়স ৪০, কাঁকরোল ৪০, বেগুন ৬০ টাকা, লেবু প্রতি ডজন ১০০-২২০ টাকা, কাঁচা কলা ৩০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়াও দাম বেড়েছে সব রকমের মুরগির। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৭০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩৪০-৩৫০ টাকায়, লেয়ার মুরগি ২৭০ থেকে ২৯০, গরুর মাংস ৭০০, খাসি ১০০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
অপরদিকে, মাছ বাজার ফাঁকা। বেশিরভাগ দোকানই বন্ধ। দু’একটি খোলা। সেসব বিক্রেতারা ইলিশ ও রুই মাছের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। দাম জানতে চাইলে বলেন, প্রতি কেজি ইলিশ ১ হাজার ৫০০ টাকা আর রুই ৫০০ টাকা।
মাছ বিক্রেতা রাব্বানী বলেন, মাছের মূল আড়ত বন্ধ। আরও দু’একদিন পর মাছ আসবে। তখন দাম সহনীয় হবে।