জ্বালানি সংকটের কারণে লোডশেডিং এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি বর্তমানে বৈশ্বিক সমস্যায় দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
রোববার কুমিল্লায় কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির ১১ তলা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। জ্বালানি সাশ্রয় এবং উদ্ভূত পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতেই অল্প কিছু সময়ের জন্য লোডশেডিং হচ্ছে। লোডশেডিং যে শুধু আমাদের দেশেই হচ্ছে তা কিন্তু নয়। অনেক উন্নত দেশও লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছে। জ্বালানি সংগ্রহ না করার কারণে অনেক দেশ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দিচ্ছে। এটি এখন বৈশ্বিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সারা পৃথিবীই সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সবখানেই একধরনের আতংক বিরাজ করছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, রাশিয়া এবং ইউক্রেন প্রায় ২৫ শতাংশ জ্বালানি উৎপাদন করে এবং বিশ্বব্যাপী রপ্তানি করে থাকে। যুদ্ধের কারণে উৎপাদন ও সরবরাহ করতে পারছে না। যার কারণে শুধু বাংলাদেশের নয় ইউরোপ-আমেরিকাসহ সারা বিশ্বেই জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে।
মো. তাজুল ইসলাম জানান, করোনা মহামারী সংকটের পর ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের কারণে খাদ্য শস্য উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। এই দুটি দেশ বিশ্বের অধিকাংশ খাদ্য শস্যের যোগান দিয়ে থাকে। দেশ দুটি থেকে আমরাও আমদানি করে থাকি। যুদ্ধের কারণে আমরা যেমন আমদানি করতে পারছি না তারাও রপ্তানি করতে পারছে না। যার জন্য খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা শুধু বাংলাদেশই নয় সারা বিশ্বেই বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রধান অতিথি বলেন, বৈশ্বিক এই মহাসংকটের ফলে বাংলাদেশে উন্নয়নের যে অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছিলো তা একটু হলেও ব্যাহত হচ্ছে। এরপরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতায় প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ সকল প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। অনেক দেশের তুলনায় আমাদের দেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলার জন্য একটি মাস্টারপ্লান প্রণয়নের নির্দেশনা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, কুমিল্লা শহরের আয়তন, জনগণ এবং ভবিষ্যত চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে একটি দীর্ঘমেয়াদি মাস্টারপ্ল্যান করলে উন্নত, দৃষ্টিনন্দন ও বাসযোগ্য শহরে রুপান্তরিত করা সম্ভব হবে।
এ লক্ষ্যে সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়রকে স্থানীয় সংসদ সদস্য, কাউন্সিলরসহ সর্বস্তরের মানুষকে সাথে নিয়ে ঐকবদ্ধ্য হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
এসময় কুমিল্লা শহরসহ আশেপাশে এলাকায় সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য একটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রী।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. আহছান উল্লাহ খন্দকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, কুমিল্লা-৫ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল হাশেম খাঁন, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরফান হক রিফাত, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আতাবুল্লাহ বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির আইনজীবীরা অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে কুমিল্লা জেলা আইনজীবী সমিতির ১১ তলা বিশিষ্ট ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।