রাজনীতির মাধ্যমে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা চেয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেছেন, অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব হলে ইসির পক্ষে নির্বাচন করা সহজ হবে।সেজন্য নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকে একে অপরের সঙ্গে বসার পরামর্শ দিয়েছেন সিইসি।
বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের ১০ম দিনে একথা বলেন তিনি।
গণফোরাম এবং ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করে আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন।
সংলাপে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, রাজনীতির মাধ্যমে যদি পলিটিক্যাল স্ট্যাবিলিটি এনে নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তাহলে ইসির পক্ষে নির্বাচন করাটা অনেক সহজ হয়। আপনাদের সহযোগিতা লাগবে। কথা দিচ্ছি, আপনাদের প্রত্যাশা মতো একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাব। দোয়া করবেন।
তিনি বলেন, ‘ভোটে হার নয়, কোনো না কোনোভাবে জিততেই হবে- এই মানসিক দৈন্যই নির্বাচনী সহিংসতার জন্য দায়ী।আমাদের মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা আছে, আমি ইলেকশন করব এবং আমাকে জিততেই হবে। হারতে যে হতে পারে, এটা কিন্তু কেউ মেনে নিচ্ছে না। এ মনস্তাত্ত্বিক দৈন্য আমাদের মধ্যে আছে। তাই সহনশীলতা যদি জাগ্রত করা না যায়, তাহলে সংকট থেকে যাবে।’
বুধবার ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি করে। পুলিশের গুলিতে ২ বছর বয়সী এক শিশু নিহত হয়। এ প্রসঙ্গে আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচন হাড্ডাহাড্ডি যখন হয়, তখন ভোটের শেষে মারামারিটা হয়। গতকাল (বুধবার) একটা বাচ্চা মারা গেছে।নির্বাচন শেষে এ ঘটনা ঘটে। …রাত ১০ টা/১১ টার দিকে ফোন করেছি ডিসি, এসপিকে ঘটনাটা যে কী হলো। নির্বাচনটা শেষ হয়ে গিয়েছিল এবং শেষ হওয়ার মেম্বার প্রার্থী হামলা করে বসল।’
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘রাজনৈতিক সংস্কৃতি ধারণ করা, লালন করা, উন্নত করার দায়িত্ব তাদের। রাজনীতি আপনারা নিয়ন্ত্রণ করেন। আপনাদের দায়িত্ব অনেক বড়। আমরা কখনো রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না। আমরা খুব নগণ্য ব্যক্তি, আপনাদের অনেক বড় করে দেখি। আমাদের অনেক বড় প্রত্যাশা।’
‘নির্বাচনে ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে, স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, সে বিষয়ে কমিশনের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা থাকবে বলে গণফোরামের সঙ্গে বৈঠকে আশ্বস্ব করেন সিইসি।
সবার সহযোগিতা চেয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করব সর্বাত্মকভাবে। আর আপনাদেরও সহযোগিতা চাইব। আপনাদেরকে আমাদের সঙ্গে থাকতে হবে। নির্বাচনের মাঠে আপনারাও যদি থাকেন, আমরাও যদি থাকি, তাহলে যে কোনো অপশক্তিকে প্রতিরোধ করা সহজ হবে।’
আজকের সংলাপে মোকাব্বির খানের নেতৃত্বে গণফোরামের প্রতিনিধি দল ১০ দফা সুপারিশ তুলে ধরে ইসির কাছে। আর ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) দিয়েছে ১১ দফা প্রস্তাব।