ভোটের পদ্ধতি বদলে নয়, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের মাধ্যমেই নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব বলে মনে করেন প্রধান নির্বাচন কমিশানার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
রোববার সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে সংলাপে নির্বাচনি পদ্ধতি পরিবর্তন নিয়ে এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে নিজের এ মত তুলে ধরেন সিইসি।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি ভোট কারচুপি যাতে না হয়, সে জন্য একটা সিস্টেম চাচ্ছে, যাতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, দলগুলোর সঙ্গে নিজেরা আলোচনা করা উচিত। তাহলে সহমত সৃষ্টি হতে পারে। এতে করে নির্বাচনি সিস্টেমটাও সহজ হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসির ধারাবাহিক সংলাপের শেষ দিনে রোববার সকালে জাতীয় পার্টির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা।
জাতীয় পার্টির প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দেন দলের মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু। তিনি বর্তমান পদ্ধতির বদলে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে ভোটের প্রস্তাব তোলেন।
চুন্নু বলেন, তিনটা সিস্টেমের নির্বাচন হয়েছে, কোনোটাই বিতর্কের বাইরে না। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হলে সিস্টেমটা পরিবর্তন করতে হবে। বর্তমান সিস্টেমে ফেরেশতা দিয়েও ফেয়ার নির্বাচন করতে পারবেন না বলে আমাদের অনুমান।
বর্তমান পদ্ধতিতে ভোটারদের সরাসরি ভোটে প্রতিটি আসনে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সংসদ গঠিত হয়। সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির প্রবর্তন হলে সংসদে আসন বণ্টন হবে প্রতিটি দলের প্রাপ্ত মোট ভোটের আনুপাতিক হারে।
জাপা মহাসচিবের প্রস্তাবের বিপরীতে সিইসি বলেন, দশ বছর আগেই আপনারা প্রস্তাবটা উপস্থাপন করেছিলেন। এটা নিয়ে তো আপনাদের সরব হতে হবে; কাউকে না কাউকে একটা নেতৃত্বসুলভ ভূমিকা নিতে হবে।
জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে সংলাপে বলা হয়, ইসি যতই দক্ষতা দেখাক, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে তা গ্রহণযোগ্য ‘হবে না’।
সিইসি তখন বলেন, আপনি বলেছেন, সিস্টেম পরিবর্তন করতে হবে। বর্তমান যে সিস্টেম, আপনি যথার্থই স্বীকার করেছেন, এ সিস্টেমে আমি যত দক্ষতা, যোগ্যতা দেখাই না কেন, সবার কাছে একেবারেই গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উঠে আসা কঠিন।
তবে সব রাজনৈতিক দল এ বিষয়ে আন্তরিকভাবে কমিশনকে সহায়তা করবে, তেমন ভাবাও ‘দুরশা’ বলে মন্তব্য করেন সিইসি।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু ছাড়ার দলের কো-চেয়ারম্যান সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, ফখরুল ইমাম, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, লিয়াকত হোসেন খোকা, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, ভাইস চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন ভূইয়া, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু অংশ নেন সংলাপে।