ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে পাকিস্তান। প্রবল মৌসুমি বৃষ্টির কারণে বন্যার ভয়াবহতা অনেক বেড়েছে। বন্যায় ইতিমধ্যে দেশটির এক-তৃতীয়াংশ পানির নিচে। এখন পর্যন্ত ১১শ’র বেশি মানুষ মারা গেছেন। গৃহহীন হয়েছেন প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষ। দেশটিতে চরম মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কায় দেশি ও বিদেশি সংস্থাগুলোর কাছে ত্রাণ সহায়তা চেয়েছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান।
ক্রমেই পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। বন্যার কারণে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে দেশটির অধিকাংশ নদ-নদীর পানি। এতে তলিয়ে গেছে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক- মহাসড়ক। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাস্তাঘাট ও সেতু। ভেঙে পড়েছে আন্তঃজেলা যোগাযোগ ব্যবস্থা। বন্যায় ডুবে গেছে হাজার হাজার ঘরবাড়ি। দেখা দিয়েছে খাদ্য ও পানির মারাত্মক সংকট। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বন্যায় অন্তত ৩ কোটি ৩৩ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সম্প্রতি পাকিস্তানের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী শেরি রেহমান জানিয়েছেন , দেশের এক-তৃতীয়াংশ পানির তলায়। বিশাল সমুদ্রে পরিণত হয়েছে দেশের একাংশ। পানি সরানোর মতো শুকনো কোনো জায়গাও নেই।
এ বন্যার কারণে ইতোমধ্যে দেশজুড়ে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করছে পাকিস্তান সরকার।এ ছাড়া বর্ষা মওসুমের বিরামহীন এই বর্ষণকে ‘মহাকাব্যিক পর্যায়ের জলবায়ুজনিত মানবিক সংকট’ বলেও অভিহিত করেছে তারা।এছাড়া বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্যায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ১৩৬ জন মারা গেছেন। প্রকৃত সংখ্যাটা আরও বেশি হতে পারে। কারণ উত্তরের পাহাড়ি এলাকার প্রচুর গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। শনিবার কাবুল নদীর পানির জোয়ারে খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চলের একটি বড় সেতু ভেসে গেছে। এতে এক জেলার মানুষের সঙ্গে পুরোপুরি সড়ক যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে যায়। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সিন্ধু প্রদেশের বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, দুর্যোগের মাত্রা এমন হবে কল্পনা করতে পারেননি। অগস্টের গড় বৃষ্টিপাতের প্রায় আট গুণ হয়েছে এ বছর।