ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ৫ সেপ্টেম্বর বিমানবন্দরে তাঁর আগমনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানাবেন এবং তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে। সরকারি সূত্র একথা জানায়। পরে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মহাত্মা গান্ধীর সম্মানে রাজঘাটে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন বলে আজ সন্ধ্যায় প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর ভারতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে যাবেন। সফরে তিনি কয়েকজন মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সমন্বয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন। এছাড়া বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে তাঁর সঙ্গে থাকবেন। সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকারের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। ঐতিহাসিক হায়দ্রাবাদ হাউসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন তিনি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির দেয়া রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। নয়া দিল্লীতে অবস্থানকালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এ সময় কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ (সিআইআই) কর্তৃক আয়োজিত বেশ কয়েকটি ব্যবসায়িক অনুষ্ঠানে তাঁর যোগদানের কথা রয়েছে। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পরবর্তীতে, তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ ও গুরুতর আহত ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ২০০ জন সদস্যের বংশধরদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের একটি উদ্যোগ মুজিব বৃত্তি প্রদান করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোভিড-১৯ মহামারী শুরু হওয়ার আগে ২০১৯ সালের অক্টোবরে শেষবার সফর করার পর দীর্ঘ তিন বছরের ব্যবধানে ভারতে এই রাষ্ট্রীয় সফর করছেন। সূত্র জানায়, এই সফর বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ের জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ কারণ এটি দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচন করবে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (এমইএ) আজ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগামী ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর ভারত সফরের ঘোষণা দিয়েছে।
এমইএ মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর ঘোষণা করতে পেরে আমি আনন্দিত’। এটি এই বছরের ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর একটি রাষ্ট্রীয় সফর হবে। সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং ভাইস-প্রেসিডেন্ট জগদীপ ধনকারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন।
বাগচি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে প্রধানমন্ত্রীর আজমির শরীফ যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাগচি বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সফরসহ উচ্চ পর্যায়ের সম্পর্ক বজায় রেখেছে। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন সফর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন এবং পারস্পরিক আস্থা ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে দুই দেশের মধ্যে বহুমুখী সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ ভারত সফর করেন ২০১৯ সালের অক্টোবরে।
এদিকে, কূটনৈতিক, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক মহল বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন। গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, এই সফরটি একটি অত্যন্ত ইতিবাচক ফলাফল দেবে এবং বর্তমান বৈশ্বিক ভূ-রাজনৈতিক উন্নয়নের পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতার একটি নতুন যুগের সূচনা করবে। তারা আরো বলেন, এই সফর বাংলাদেশে ভারতের বিনিয়োগ আরো জোরদার করবে।সূত্র-বাসস।