হরহামেশায় আমরা শুনে থাকি চাকরি দেয়ার নাম করে বিভিন্ন মানুষ জনের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিচ্ছেন বিভিন্ন দলের বা সংগঠনের নেতারা। কিন্তু বিনিময়ে প্রতারণার শিকার হন চাকরি প্রত্যাশীরা। আর এমনই প্রতারণার শিকার হয়ে এক তৃণমূল নেতাকে গাছে বেঁধে ব্যাপক মারধর করলেন স্থানীয়রা। শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায়। অভিযুক্তের নাম দিলীপ পাত্র। তিনি তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের ডেবরা ব্লকের প্রাক্তন সভাপতি। তাঁকেই একটি গাছে দড়ি দিয়ে বেঁধে লাঠিপেটা করলেন ডেবরা এলাকার আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন।
ওই এলাকার ৩ নম্বর অঞ্চলের সত্যপুর এলাকায় একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশে একটি গাছে বাঁধা হয় তৃণমূল নেতাকে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বেশ কয়েক জন আদিবাসী ছেলেমেয়েকে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলেন দিলীপ। কিন্তু দিনের পর দিন পাড় হলেও চাকরি দিতে পারেননি দিলীপ পাত্র। বেশ কয়েক জন টাকা ফেরতের দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেননি তিনি। তাই টাকা ফেরত না পেয়ে এমন ব্যবস্থা নিয়েছেন স্থানীয়রা।
কানাই মুর্মু নামে এক ব্যক্তি বলেন, রেলে চাকরি দেওয়ার নাম করে আমার আত্মীয়ের কাছ থেকে আড়াই বছর আগে পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন দিলীপ। চাকরি তো হয়ইনি, উল্টো কলকাতায় নিয়ে গিয়ে এক মাস আমার আত্মীয়ের টাকায় ওরা খাওয়াদাওয়া করেছে। টাকা চাইলে আজ দেব, কাল দেব বলে এড়িয়ে গিয়েছে।
ভারত জাকাত মাঝি পরগনা মহলের ব্লক সভাপতি গোপাল মুর্মু বলেন, এ রকম অনেকের কাছ থেকে উনি টাকা নিয়েছেন। দিলীপ নিজেও পরে স্বীকার করেছেন যে, তিনি চাকরি দেবেন এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, কলকাতায় ‘এক জন’ তাঁকে বলেছিলেন যে টাকা দিলে চাকরি পাইয়ে দেবেন। তাঁর কথায়, কিন্তু সে চাকরি দিতে পারেনি। যে টাকা নিয়েছিলাম সে সব ওকে দিয়েছিলাম। চেকও দিয়েছিলাম। তবে কিছু টাকা কম থাকায় তা বাউন্স হয়ে যায়। কলকাতার ওই লোককে টাকা ফেরত দিতে বলেছিলাম। কিন্তু সে এক টাকাও ফেরত দেয়নি। যদিও কলকাতার এই লোকটি কে, তা তিনি বলেননি।
এ নিয়ে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি বিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া জানতে যোগাযোগ করেছিল দেশটির শীর্ষ সংবাদমাধ্যম, তাদের তিনি বলেছেন, ব্লকের বাইরে আছি। এমন একটা ঘটনা হয়েছে বলে শুনেছি। পুলিশকে বলেছি, বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য। অন্য দিকে, পুলিশ জানান, দিলীপ নামে এক জনকে বেঁধে মারধরের খবর পেয়েছেন। খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও পক্ষই কোনও লিখিত অভিযোগ করেনি থানায়। সূত্র: আনন্দবাজার।