২৩, ডিসেম্বর, ২০২৪, সোমবার
     

৪৯৮ রিকন্ডিশন গাড়ি নিয়ে পানামা পতাকাবাহী “এমভি লোটস লিডার”

এস এম সাইফুল ইসলাম কবির. বাগেরহাট :
বাগেরহাটেরমোংলা সমুদ্র বন্দরে খালাস করা হচ্ছে একের পর এক গাড়ীবাহি জাহাজ। (২৬ সেপ্টেম্বর) মঙ্গলবারও পানামা পতাকাবাহী “এমভি লোটস লিডার” নামের বিদেশী একটি বানিজ্যিক জাহাজে ১টি প্যাকেজ সহ ৪৯৭টি গাড়ী নিয়ে বন্দরের ৮ নম্বর জেটিতে নঙ্গর করে গাড়ী খালাস করা হচ্ছে।

আমদানীকারক বলছে, ঢাকার সাথে মোংলা বন্দরের দুরত্ব কম হওয়ায় দেশে আমদানী করা বেশীর ভাগ গাড়ী এখান মোংলা বন্দর দিয়ে থেকে কালাস করা হচ্ছে। কারণ, মোংলা বন্দরে জাহাজ ঝট নেই, তা ছাড়া এখানে গাড়ীর রাখার পর্যাপ্ত সেড ও জায়গা রয়েছে। এছাড়া সড়ক পথে ঢাবার ব্যাবসায়ীদের বিক্রয় শো-রুমে পৌছাতে কোন বেগ পেতে হয়না বলেই মোংলা বন্দরকে বেঁচেন নেয়া হয়েছে।

জাহাজটির স্থানীয় এন ওয়াই কে শিপিং লাইন্স এজেন্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, দেশের বড় বড় মেঘা প্রকল্পের পণ্য শুরু থেকে মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস করে আসছে আমদানীকারকরা। তা ছাড়াও গাড়ী আমদানীকরা বেশীর ভাগ গাড়ী মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস করছে। গত এক বছরে এ বন্দর দিয়ে মোট ৩২টি বানিজ্যিক জাহাজে ১৭ হাজার ৯৪৪টি জাপানী বিভিন্ন মডেলের গাড়ী মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) “এমভি লোটস লিডার” নামের পানামা পতাকাবাহী একটি বিদেশী বানিজ্যিক জাহাজ ১টি প্যাকেজ সহ ৪৯৭টি গাড়ী নিয়ে মোংলা বন্দরে নঙ্গর করেছে। এর মধ্যে রয়েছে হাইব্রিড প্রিমিও, মাইক্রোবাস এক্সিও, অ্যাকুয়া, প্রাডো সহ একাধিক ব্র্যান্ডের জাপানী রিকন্ডিশন গাড়ী।

প্রথমে জাপান থেকে গাড়ীগুলো সিঙ্গাপুরের একটি বন্দরে মজুদ করা হচ্ছিল। পরে গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুর বন্দর থেকে ২১টি প্যাকেজ সহ জাপানের তৈরী ৮৮৫টি গাড়ী নিয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশে ছেড়ে আসে “এমভি লোটস লিডার”। ৮দিন ধরে সাগর পথ পাড়ি দিয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর প্রথমে চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌচায়। সেখানে ৩৪৮টি গাড়ি ও ২০টি প্যাকেজর মালামাল খালাস করা হয়। এদিন রাতে বাকি ১টি প্যাকেজে গাড়ীর যন্ত্রাংশ ও ৪৯৭টি রিকন্ডিশন গাড়ি নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর ত্যাগ করে মোংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে জাহাজটি।

আজ মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে মোংলা বন্দরের ৮নম্বর জেটিতে নোঙ্গর করার পর খালাস কাজ শুরু করে গাড়ী খালাসকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স খুলনা ট্রেডার্স লিমিটেড’র প্রতিনিধিরা। এ বন্দরে খালাস করা হয় ৪৯৭টি রিকন্ডিশন বিভিন্ন মডেলের গাড়ি ও একটি প্যাকেজে গাড়ীর যন্ত্রাংশ। এ ছাড়া মোংলা বন্দরের জেটিতে গাড়িগুলো খালাস করতে মাত্র ১২ ঘন্টা সময় লাগবে বলে জানিয়েছে জাহাজটির এন ওয়াই কে শিপিং লাইন এজেন্ট ও গাড়ী খালাসকারী কর্তৃপক্ষ।
খালাসকৃত গাড়িগুলো বন্দরের জেটির ইয়ার্ড ও সেডে সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। পরে সড়ক পথে দেশীয় গাড়ী আমদানিকারক ব্যবসায়ীদের বিক্রয় শো-রুমে নিয়ে যাওয়া হবে।

গাড়ী খালাসকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স খুলনা ট্রেডার্স লিঃ এর সুপারভাইজার মোঃ রুহুল আমিন জানান, গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুর থেকে ছেড়ে আসা এম,ভি লোটাস লিডার জাহাজটি ২৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে মোংলা বন্দরের ৮নম্বর জেটিতে ভিড়ে। এরপর দুপুর থেকেই জাহাজে থাকা ৪৯৭টি গাড়ী খালাসের কাজ শুরু হয়। খালাসকৃত গাড়ী বন্দরের সেডে রাখা হচ্ছে। টানা ১২ ঘন্টায় খালাস কাজ শেষে ২৭ সেপ্টেম্বর বুধবার জাহাজটি মোংলা বন্দর ত্যাগ করবে।

বারভিডার প্রতিনিধি শেখ আবেদুর মুবিন জানায়, অন্যান্য বন্দরের তুলনায় মোংলা বন্দরে বেশি সুযোগ সুবিধা থাকায় ব্যাবসায়ীরা মোংলা বন্দরকে বেছে নিয়েছে। কারণ, পদ্মা সেতু চালু ও সড়ক পথের অবকাঠামোগত দিক ঠিক হওয়ায় ঢাকার সঙ্গে মোংলা বন্দরের দূরত্ব কমেছে, ফলে ব্যবসায়ীদের সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হচ্ছে। আগে মোংলা বন্দর থেকে ঢাকায় পৌঁছাতে সময় লাগত ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা। এখন মোংলা থেকে মাত্র ৩ ঘন্টায় ঢাকায় পৌঁছানো যায়। তাই বেশীর ভাগ বিদেশী রিকন্ডিশন গাড়ী এখন মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস হচ্ছে। সর্ব শেষ গত ১৬ সেপ্টেম্বর ১৮ ঘন্টায় ৭৯৫টি গাড়ী খালাস করে মোংলা বন্দর ত্যাগ করেছিল মালেশিয়ান পতাকাবাহী জাহাজ

               

সর্বশেষ নিউজ