শরীয়তপুর প্রতিনিধি:
বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় রোর্ড মার্চের সমাপনী সমাবেশে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন না ঘটাতে পারলে দেশের মানুষ বাঁচবে না, দেশের স্বাধীনতা থাকবে না। এদেশের মানুষের সম্পদ লুটে নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের লোকজন বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছে। অথচ দেশের মানুষ না খেয়ে মরছে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণ হলো দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার। আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজ নেতাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই দেশের মানুষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯ টায় শরীয়তপুরের বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ স্টেডিয়ামে ফরিদপুর বিভাগীয় রোর্ড মার্চের সমাপনী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপির আন্দোলনের একমাত্র লক্ষ্য হলো আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ। দেশের মানুষকে মুক্তি দেওয়া। ফরিদপুর অঞ্চল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ঘাটি। আমরা এক বছর ধরে আন্দোলন করছি, আমরা আন্দোলন করতে গিয়ে অনেক নেতাকর্মীকে হারিয়েছি। বিএনপির ২২ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে এই স্বৈরাচার সরকার। এরপরেও বিএনপির নেতাকর্মীরা দমে যায়নি। বিএনপির লক্ষাধিক নেতাকর্মী কারাগারে রয়েছেন। এই সরকার গুম করছে, হত্যা করছে, গায়েবানা মামলা করছে। তারপরেও তারা বেগম খালেদা জিয়া, দেশের মানুষকে ভালোবেসে বিএনপির পতাকা সমুন্নত রাখছেন।
সেলিমা রহমান আরও বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি রোর্ড মার্চের কর্মসূচি শেষের দিকে। আপনারা রোর্ড মার্চে দেখেছেন রাজবাড়ির গোয়ালন্দ, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর, মাদারীপুর ও শরীয়তপুরের মহাসড়কে মানুষের ঢল নেমেছে। জনগণের এই ঢলের অর্থ হলো- দেশের মানুষ ফ্যাসিবাদী এই আওয়ামী লীগের পতন চায়। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে জনগণের প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর দেখতে চায়।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের মানুষকে নিঃশে^স করে দিয়েছে। অত্যাচার, অনাচার, গুম, খুনসহ এমন কোনো অনাচার নেই যা তারা এদেশের মানুষের সাথে করে নাই। এদেশের গণমানুষের নেত্রী, সাবেক তিন বারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া যেন দেশের মানুষকে নেতৃত্ব দিয়ে মুক্ত করতে না পারেন, সেজন্য তাকে মিথ্যা মামলায় কারবন্দি করে রেখেছে। এই মানুষটি বর্তমানে কারাগারে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছেন। নিজেদের মুক্ত করতে চাইলে আগে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে তার চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। দেশের জনগণ আজ জেগেছে, কোনো অন্যায় আর হতে দেওয়া হবে না। যে আন্দোলন দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে, সে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে ইনশাআল্লাহ।
বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, আমাদের দেশনেত্রী গনতন্ত্রের মাতা, বেগম খালেদা জিয়া অত্যান্ত অসুস্থ অবস্থায় আছেন।তার সুচিকিৎসার জন্য,তাকে মিথ্যা মামলায় জেলে ভরে রেখে দুকে দুকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এর জন্য দায়ী থাকবে একমাত্র এই আওয়ামী লীগ ও অবৈধ সরকার।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যহার করাসহ নিরোপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন দিতে হবে।
একটি গনতন্ত্র পরিবেশ প্রতিষ্ঠার দাবীতে,মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবীতে আজকের এই লংমার্চ।
আমাদের দেশ মাতা,গণতন্ত্রের মাথা বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ অবস্থা আছেন আর ভোট চোর এই সরকার বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলে কোন সাহসে। এই দেশে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছারা, গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ছারা, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ছারা,আন্তর্জাতিক মানের গ্রহণ যোগ্য নির্বাচন ছারা এই দেশের মাটিতে কোন নির্বাচন হবে না।
সরকারের পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণের এক দফা দাবিতে রাজবাড়ী থেকে বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় রোডমার্চ শুরু হয়ে শরীয়তপুর এসে সমাপ্তি হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আওয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, বীর মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক শাহজাদা মিয়া, রোডমার্চের সমন্বয়ক ও বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ প্রমুখ।
জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি শফিকুর রহমান কিরনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা সরদার একেএম নাসির উদ্দীন কালুর সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে সার্বিক ব্যাবস্থাপনায় ছিলেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ আহমেদ আসলাম।
এছারাও আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এডভোকেট জামাল শরিফ হিরু,কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি কর্নেল (অব) এস এম ফয়সাল, জেলা বিএনপির সহ- সভাপতি সাহ মোহাম্মদ আব্দুস সালাম,সিরাজুল হক মোল্লা,বিএম হারুন অর রশিদ,বিএনপি নেত্রী রাজিয়া সুলতানা রানী,যুগ্ম সম্পাদক দুলাল খান,টিপু মাদবর,মহিউদ্দিন বাদল,সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুব তালুকদার, হামিদ সরদার,দপ্তর সম্পাদক এডভোকেট কামরুল হাসান,ভিপি নাজমুল হক বাদল, এড. মৃধা নজরুল সহ জেলার বিএনপির ও অংগ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতৃবৃন্দ।