২১, নভেম্বর, ২০২৪, বৃহস্পতিবার
     

তিস্তার পানি কমে বিপদসীমার নিচে

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

পানি কমার পর বৃহস্পতিবার বিকালে রাজারহাটের বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন থেকে তোলা তিস্তা নদীর ছবিপানি কমার পর বৃহস্পতিবার বিকালে রাজারহাটের বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন থেকে তোলা তিস্তা নদীর ছবি

ভারতের সিকিমে আকস্মিক বন্যায় উজানের ঢলে গত দুই দিন তিস্তার পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেলেও বৃহস্পতিবার সকালের পর তা কমতে শুরু করেছে। ফলে আপাতত বন্যার শঙ্কা কেটে গেছে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন। শুক্রবার তিস্তার পানি আবারও কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা থাকলেও বড় বন্যার আশঙ্কা নেই বলেও জানান তিনি।

এর আগে বুধবার ভারতের সিকিমে আকস্মিক বন্যা ও তিস্তার একটি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বাংলাদেশের উত্তরের পাঁচ জেলার তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় বন্যার আশঙ্কার পূর্বাভাস দেয় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)।

উজানের ঢলে তিস্তার পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে বাংলাদেশের নীলফামারীর ডালিয়া ও রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করে। কয়েকটি স্থানে তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে। তবে বৃহস্পতিবার সকালের পর থেকে কমতে শুরু করে। দিনভর পানি কমে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।

পাউবো, কুড়িগ্রামের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পর বেলা ৩টায় তা ৩৫ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। সন্ধ্যা ৬টায় তা আরও কমে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচে নেমে আসে। এ সময় পর্যন্ত পানিপ্রবাহ হ্রাস পাচ্ছিল।

এদিকে, সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতিতে জেলার রাজারহাট ও উলিপুরে তিস্তা তীরবর্তী ছয়টি ইউনিয়নে বাড়তি সতর্কতা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের সতর্ক করতে মাইকিংয়ের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সংখ্যক আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়। তবে বৃহস্পতিবার সকালের পর পানি কমতে শুরু করলে তিস্তা তীরবর্তী বাসিন্দাদের মাঝে স্বস্তি ফেরে।

রাজারহাটের বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের তিস্তা তীরবর্তী কালিরহাট এলাকার বাসিন্দা মিলন বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় বলেন, ‘পানি একদম কমে গেছে। মনে হচ্ছে আর বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা নাই।’

রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কাবেরী রায় বলেন, ‘উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে মাইকিং করে সম্ভাব্য বন্যার সতর্কতা প্রচার করা হয়েছে। স্থানীয় মসজিদ থেকেও মাইকিং করা হয়েছে। পরিস্থিতির অবনতি হলে নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের সময়মতো আশ্রয়কেন্দ্রসহ নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।’

পাউবো কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘পানি কমতে শুরু করেছে। আকস্মিক যে বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছিল তা কেটে গেছে বলেই মনে হচ্ছে। যদিও শুক্রবার পানি আবারও কিছুটা বাড়তে পারে। তবে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা কম।’

               

সর্বশেষ নিউজ