সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি:
বিচারে ঘুষ খাওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের কারণে সিরাজদিখান উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ মজিবর রহমানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে। আজ ৮ অক্টোবর রবিবার সকাল ১০টায় রাজানগর বাজারে এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ মিছিল কর্মসূচি থেকে চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি করা হয়।
ওই ইউনিয়নের তেঘুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা শহীদুল মাদবরের ডাকে সারা দিয়ে শতাধিক গ্রামবাসী ও ভোক্তভোগী এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ মিছিল অংশ নেয়।
ভুক্তভোগী শহিদুল মাদবর বলেন,গত ৬ তারিখ শুক্রবার দক্ষিণ রাজানগর গ্রামে মেজর ফেরদৌসী,মাসুম বিল্লা ও সিরাজুল ইসলামের সাথে জমি সংক্রান্ত মাপ চলছিল । আমি একজন সার্ভেয়ার তাই মেজর ফেরদৌসী পক্ষে মাপে অংশগ্রহণ করি, মাসুম বিল্লার পক্ষে একজন এবং সিরাজুল ইসলামের পক্ষেও একজন সার্ভেয়ার অংশগ্রহণ করেন । আমরা তিনজনে জমি সরেজমিনে মেপে একমত হই । উক্ত জমির কাগজে আছে ৪৭ শতাংশ কিন্ত সরেজমিনে অর্থাৎ ম্যাপ এ আছে ৪৬ শতাংশ ।মানে ১ শতাংশ কম । প্রতিপক্ষের আমিনের অনুরোধে আমি চেয়ারম্যান ও গ্রাম্য সালিশদের সামনে মাপের বর্ণণা দেই । যখন বলি সরেজমিনে ১ শতাংশ কম আছে এ কথা বলা মাত্র চেয়ারম্যান আমাকে চড় মারে এবং তার সাথে থাকা তার বাহিণীর লোকজন আমাকে এলোপাথারী মারতে থাকেন । অন্যান্য লোকের সহযোগীতায় আমি তৎক্ষনাৎ প্রানে বেঁচে যাই ।
তিনি আরও বলেন, সেখানে দাঁড়ানো ছিল শেখরনগর তদন্ত কেন্দ্রের সাব ইন্সপেক্টর অলিআর রহমান কিন্ত দুঃখের বিষয় তিনি আমাকে রক্ষা করার কোন ভূমিকাও রাখেন নি । এই পুলিশ কর্মকর্তা চেয়ারম্যানের সাথে মিলে প্রায় মানুষের জমি সংক্রান্ত বিষয়সহ নানাভাবে মানুষকে হয়রানী করে এতে করে চেয়ারম্যান বাহিণী আরও শক্তিশালী হয়েছে এবং এলাকার সাধারণ মানুষের ভিতরে আতংক কাজ করছে ।
আরও বক্তারা অভিযোগ করেন, রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শক্ত এক বাহিণী তৈরী করেছেন তাদের মাধ্যমে যে কোন বিচারে ঘুষ গ্রহণ, রাস্তাঘাটসহ উন্নয়নে টাকা ছাড়া কোন কাজ করে না,জমি সংক্রান্ত বিষয়ে মানুষকে জিম্মী করে টাকা নিচ্ছে,কেউ ব্যক্তিগত কোন কাজ করলেও চেয়ারম্যানকে চাঁদা দিতে হয়, জন্ম নিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদ নিতে গেলে টাকা ছাড়া কোন কাজ করা যায় । মোটকথা টাকা ছাড়া এ ইউনিয়নে কোন কাজ করা যাবে না । কারও আশেপাশে দিয়ে রাস্তা গেলেও তাদের থেকে চাঁদা নেয় এ চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যান প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ কিছু বলতেও সাহস পায় না। তার হাত থেকে নারীরাও রেহাই পায় না ।
শেখরনগর তদন্ত কেন্দ্রের সাব ইন্সপেক্টর অলিআর রহমান বলেন, আমি সেদিন একটা পুজামন্ডপ পরিদর্শনে গিয়েছি পাশে হৈচৈ শুনে আমি সেখানে যাই, কোন মারামারি দেখিনি । আমি শহিদুল ভাইকে ছাড়িয়ে নিয়ে ফাঁকে দিয়ে এসেছি এবং বলেছি আপনার কোন অভিযোগ থাকিলে তদন্ত কেন্দ্রে অভিযোগ দেন আমরা ব্যবস্থা নিব ।
জমির মালিক মেজর ফেরদৌসী বলেন, আমার জমি মেপে বুঝে নেয়ার জন্য আম শহীদুলকে নিয়োগ দেই । মাপার পর অন্য দুইজন সার্ভেয়ারের অনুরোধে শহীদুল বর্ণণা দেয় । যখনই ৪৬ শতাংশ বলেছে, বলা মাত্রই চেয়ারম্যান উঠে শহীদুলকে চড় মারে ও তার সহযোগীরা এলোপাথাড়ী মারতে থাকে এবং পাশে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা অলিয়ার রহমানকে গ্রেফতার করতে বলেন । পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেফকারও করেন নি, ঘটনা থামায়ওনি ।
চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে গিয়ে চেয়ারম্যানকে পাওয়া যায়নি । সাংবাদিকদের অনেকের নম্বর থেকে ফোন দিলেও চেয়ারম্যান মোঃ মজিবুর রহমান ফোন রিসিভ করেন নি ।
এ ব্যাপারে সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাব্বির আহমেদ জানান, আমি আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম । যদি আমার নিকট লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে আমি তদন্ত সাপেক্ষ ব্যবস্থা নিব ।