২২, ডিসেম্বর, ২০২৪, রোববার
     

বিএনপিতে ফেরার প্রশ্নে শাহজাহান ওমর বললেন ‘তওবা-আস্তাগফিরুল্লাহ’

জেল থেকে বেরিয়ে নৌকার মনোনয়ন পেয়ে সারা দেশে শোরগোল ফেলে দেন বিএনপির প্রবীণ নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর (বীর উত্তম)। আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েই আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ঝালকাঠি-১ আসন থেকে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন শাহজাহান ওমর। তবে ভবিষ্যতে আবারও বিএনপিতে ফেরার কোনো সম্ভাবনা আছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে শাহজাহান ওমর বলেন, ‘তওবা-আস্তাগফিরুল্লাহ’।

দীর্ঘদিনের দল বিএনপিকে ত্যাগ করে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়াকে ‘ডিগবাজি’ বলে মনে করেন না এই নেতা। তার ভাষ্য, এটি তার সাংবিধানিক অধিকার। ঈমান একমাত্র আল্লাহর কাছে, বেঈমানি তো ধর্মের বিষয়। রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা বেঈমানি নয়।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ কার্যালয় থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

শাহজাহান ওমর বলেন, এটিকে ডিগবাজি বলে নাকি? এটি সাংবিধানিক অধিকার, আদর্শগত ব্যাপার। সবসময় সবখানে এডজাস্টমেন্ট করা সম্ভব নাও হতে পারে। আমি এই বৃদ্ধ বয়সে এসে মনে হলো জনগণের জন্য কাজ করি। কারণ, আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আমার রাজনীতি করে রুটি-হালুয়া লাগে না, আমার মন্ত্রী হওয়ার দরকার নেই। আমি সব হয়েছি, এই মাটি আমাকে সব দিয়েছে।

তিনি বলেন, একটা দল করা আমার সাংবিধানিক অধিকার। দেশের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে বড় বড় রাজনীতিবিদরাও দল পরিবর্তন করেন। আমি পাকিস্তান আর্মিতে ছিলাম, শপথ পাঠ করেই অফিসার হয়েছি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় আগস্ট মাস থেকে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি।

একাত্তরের রণাঙ্গনের এই বীর উত্তম বলেন, আমি বরিশাল বিভাগের কমান্ডার ছিলাম। দেশের স্বার্থে পাকিস্তান আর্মি ত্যাগ করেছি। কিন্তু আমি তো পাকিস্তান আর্মির শপথ নিয়েছিলাম, পরে তাহলে পাকিস্তানের সঙ্গে বেইমানি করেছি। কিন্তু দেশের জনগণের সঙ্গে বেইমানি করতে পারিনি। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য শেখ মুজিব সরকার আমাকে বীর উত্তম খেতাব দিয়েছে।

সরকারের সঙ্গে আপস করে জামিন পেয়েছেন কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাশিমপুরে (কারাগারে) আপস করে কেমন করে। ২৯ নভেম্বর নরমাল প্রসেসে আমার জামিন হয়েছে। ৩০ নভেম্বর আওয়ামী লীগে জয়েন করেছি। জামিন আমার এমনিতেও হতো। ৪ নভেম্বর গ্রেফতার হয়েছি, ৬ তারিখে সুপ্রিমকোর্টে জামিনের জন্য আমার আইনজীবী আবেদন করেন। কিন্তু জামিন হলো না। পরের তারিখে গেলাম, তখন আমার আইনজীবী আদালতকে বললেন, সঙ্গে থাকা তিনজনকে জামিন হলো, আমাকে কেন দেওয়া হবে না? এ ছাড়া আমি চারবারের এমপি, বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। এজন্য আদালত আমাকে জামিন দিয়েছেন।

নাশকতার মামলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সদ্য বিএনপি ত্যাগকারী শাহজাহান ওমর বলেন, মামলা হতেই পারে। আমি তো ২৮ অক্টোবর ঘটনার দিন মঞ্চে ছিলাম। এটা তো অস্বীকার করতে পারি না। তাই নাশকতামূলক যে কোনো মামলা হতেই পারে। তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পেলে পুলিশ আমার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেবে, বিচারের কাঠগড়ায় পাঠাবে।

ডিবি কার্যালয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে শাহজাহান ওমর বলেন, কোর্ট থেকে এখানে এসেছি, একটা ব্যক্তিগত কারণে। আমি আগে বিএনপি করতাম, এখন আওয়ামী লীগে জয়েন করেছি। এরপর থেকে আমি সাইবার বুলিংয়ের স্বীকার হচ্ছি। আমার ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী এমনকি আমার জুনিয়র আইনজীবীর ফোনে ফোন করে নানা কথা বলা হচ্ছে। সে বিষয়টিই হারুন সাহেবকে (ডিবিপ্রধান) জানাতে এলাম।

               

সর্বশেষ নিউজ