দেশে নির্বাচনের পরপরই ফের বাড়তে শুরু করেছে গরুর মাংসের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি দরে বেড়েছে ৫০-১০০ টাকা ।
নির্বাচনের আগেও যেখানে দেশের বিভিন্ন স্থানে গরুর মাংসের কেজি ছিল ৬০০-৬৫০ টাকা। কিন্তু গত ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের পরবর্তী সপ্তাহেই সেই দাম ফের গিয়ে ঠেকেছে ৭০০ টাকায়।
ব্যবসায়ীদের দাবি, অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ায় এবং ভোটের আগে কম দামে গরু আনতে পারায় কেজি দরে মাংসের দাম কমেছিল। কিন্তু কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে খামারিরা এখনই বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু সংগ্রহ করছে। তারা মাঠপর্যায়ে গরুর দর বাড়িয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে মাংস বিক্রিতে।
রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ দোকানেই প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। কোনো কোনো দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৭২০ টাকায়, আবার একটি-দুটি দোকানে ৬৫০ টাকাতেও বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস।
ক্রেতারা বলছে, গরুর মাংস ৬৫০ টাকায় বিক্রি করেও ব্যবসায়ীরা লাভ করেছে। এখন রমজানের আগে আরও বেশি লাভ করতে তারা সবাই মিলে ফের সিন্ডিকেট করেছে। সামনে রমজান এলে এই দর হয়তো আরও বাড়ানো হবে। তাই এখনই বাজারে সরকারের কঠোর নজরদারি দরকার।
দাম বাড়ানোর কারণ জানতে চাইলে এক মাংস বিক্রেতা বলেন, ‘৪ মণের গরু আগে ১ লাখ ২৫ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় কেনা যেত। কিন্তু এখন ১ লাখ ৪০ হাজারের নিচে গরু মিলছে না। তাই দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছি।’
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘প্রতিটি গরুর দাম অন্তত ১০ হাজার টাকা বেড়েছে বলে কিছু ব্যবসায়ী বলেছে। খামারিরা কেন দর বাড়াল, তা জানতে হবে। তা ছাড়া মাংসের দাম কীভাবে কমনো যায়, সে বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে একটা ধারণা দেওয়া হয়েছে ভোক্তা অধিদপ্তর থেকে। কিন্তু প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এ ক্ষেত্রে কেন উদ্যোগ নিচ্ছে না– সে প্রশ্ন থেকে যায়। ভোক্তা অধিদপ্তর তো দোকানে দোকানে গিয়ে পাহারা দিতে পারবে না। তবে জনস্বার্থে অধিদপ্তরের কাজ চলমান।’
বাংলাদেশে শেষ কয়েক বছর অস্বাভাবিক হারে বেড়েছিল মাংসের দাম। সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের হিসাবানুযায়ী ২০১৮ সালে মাংসের কেজি ছিল গড়ে ৪৩০ টাকা। যা ২০১৯ সালে হয় ৫০০ টাকা, ২০২০ সালে হয় ৬০০। ২০২১ সালে তা আরও বেড়ে হয় ৬৫০ টাকা, পরের বছর ৭০০ টাকা, আর শেষ গত ২০২৩ সালের রোজায় এ দাম ছুঁয়ে ফেলে ৮০০ টাকা।