পাকিস্তানে এবারের নির্বাচনে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ফলে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকেই জোট গড়ে সরকার আসার চেষ্টা করছে বড় দলগুলো। এ দৌড়ে ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন ও বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পিপিপি। জোট সরকার গঠন নিয়ে একমত হলেও কোনোভাবেই ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারছে না দল দুটি। ফলে সরকার গঠন নিয়ে অচলাবস্থা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘায়িত হয়ে চলেছে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা প্রথম, পিএমএল-এন দ্বিতীয় ও পিপিপি তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে।
নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরই জোট গঠন করে আসতে সমন্বয় কমিটি গঠন করে পিএমএল-এন ও পিপিপি। ইতোমধ্যে পাঁচবারের মতো বৈঠক করেছে এই কমিটি। মঙ্গলবার পঞ্চমবারের মতো বৈঠকে বসে দল দুটি। তবে এই বৈঠক থেকেও বড় কোনো ঘোষণা দিতে পারেনি দলের নেতারা।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, জোট সরকার গঠন নিয়ে শর্তাবলি নির্ধারণের জন্য দুই দলের মধ্যে পঞ্চমবারের মতো আন্তঃদলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত উভয়পক্ষ কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি।
বৈঠকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট, সংসদের উচ্চকক্ষ সিনেটের চেয়ারম্যান ও নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের স্পিকার পদের দাবি করেছে পিপিপি। এই তিন সাংবিধানিক পদের বিনিময়ে জাতীয় পরিষদে পিএমএল-এন-এর প্রধানমন্ত্রী প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বিলাওয়ালের দল।
সূত্রের বরাতে আরেক পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এআরওয়াই নিউজ জানিয়েছে, বিভিন্ন দলের সম্বন্বয়ে গঠিত জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হবেন শাহবাজ শরিফ। অন্যদিকে আসিফ আলি জারদারি হবেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট।
সূত্র জানায়, পিপিপি জাতীয় পরিষদেরে স্পিকার ও সিনেট চেয়ারম্যানের পদ দাবি করলে তা প্রত্যাখ্যান করেছে পিএমএল-এন। দলটি বলছে, সিনেটের চেয়ারম্যান হবে পিএমএল-এন থেকে। তবে স্পিকার পদ নিয়ে এখানো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
এ ছাড়া বেলুচিস্তান প্রদেশে জোট সরকারের ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে সমঝোতা হলেও পাঞ্জাবের গভর্নর পদ পিপিপির হাতে ছেড়ে দিতে অস্বীকার করেছে পিএমএল-এন।
এমন অনিশ্চিত পরিস্থিতির মধ্যে ক্ষমতা ভাগ-বাটোয়ারায় বিন্দুমাত্র ছাড় না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন পিপিপির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেছেন, তিনি ও তার দল পিপিপি তাদের অবস্থানে অনড়। যদি কেউ নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন না করে তাহলে তিনিও অবস্থান পরিবর্তন করবেন না।