নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটতে চললো। কয়েকদিনের টানা আলোচনার পর পাকিস্তানে সরকার গঠনে ঐকমত্যে পৌঁছেছে নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএলএন) এবং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে এ ঘোষণা দেয় দল দুটি। খবর- দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন
পাক সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, সমঝোতা অনুযায়ী, ফের পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হবেন পিএমএলএনের শেহবাজ শরিফ। অপরদিকে দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট হবেন পিপিপির আসিফ আলী জারদারি।
সরকার গঠন নিয়ে মঙ্গলবার সিনেটর ইসহাক দারের বাড়িতে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন পিএমএলএন এবং পিপিপির নেতারা। সেখানে জোট সরকার গঠনের বিভিন্ন শর্তগুলো নিয়ে আলোচনা করেন তারা। এরপর এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয় এই দুই দল।
পিপিপির বিলাওয়াল ভুট্টো নিশ্চিত করেছেন, শেহবাজ শরীফ আবারও প্রধানমন্ত্রী হবেন। অপরদিকে প্রেসিডেন্ট পদে বসবেন তার বাবা আসিফ আলী জারদারি। সরকার গঠন হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। সেখানে পিপিপির আসিফ আলী জারদারিকে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিএমএলএন।
বিলাওয়াল আরও জানিয়েছেন, শুধুমাত্র পাকিস্তানের স্থিতিশীলতার জন্য তারা জোট সরকার গঠনে সম্মত হয়েছেন।তবে নতুন সরকারের মন্ত্রীসভায় তারা কোন কোন মন্ত্রণালয়গুলো নেবেন বা পাবেন সেটি পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন বিলাওয়াল।
অপরদিকে শেহবাজ শরিফ জানিয়েছেন, তারা ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু পিটিআই সরকার গঠনে পর্যাপ্ত আসন নিশ্চিত করতে পারেনি। এমনকি পিটিআইয়ের স্বতন্ত্ররা সরকার গঠন করলে পিএমএলএন বিরোধী আসনে বসতেও প্রস্তুত ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু পিটিআই সরকার গঠন করতে পারেনি। ফলে তারা সরকার গঠন করছেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বানে সর্বোচ্চ ৯২টি আসন পায় পিটিআইয়ের স্বতন্ত্ররা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭৫টি আসন পায় পিএমএলএন। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ ৫৪টি আসন পায় পিপিপি।
এর আগে ২০২২ সালের এপ্রিলে অনাস্থা ভোটে ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত করে পিমএমলএন ও অন্যান্য দলগুলো। এরপর তারা জোট সরকার গঠন করে। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী হন তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই শেহবাজ শরিফ। নির্বাচনের জন্য মাঝে আসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী হন আনোয়ার উল হক কাকার। এখন দ্বিতীয়বারের মতো দেশটির নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন শেহবাজ।