১৬, নভেম্বর, ২০২৪, শনিবার
     

দেখেই প্রাণ জুড়িয়ে যায় মাগুরার রামপদ বিশ্বাসের বারোমাসী ভিয়েতনামী মালটা ও কমলার বাগান

ড. মুসাফির নজরুল, মাগুরা

প্রায় ২০ বিঘা জমিতে রামপদ বিশ্বাস লাগিয়েছেন বারোমাসী ভিয়েতনামী মালটা ও কমলার গাছ। সারি সারি গাছে ঝুলে থাকা মালটা ও কমলা দেখে যে কোনো পথচারী থেমে যেতে বাধ্য। এক অসাধারণ মনোরম দৃশ্য। প্রতিগাছে এক থেকে দুই মণ মালটা ও কমলা লেবু উৎপাদন হবে এ বছর। চলতি মৌসুমে ইতোমধ্যে তোলা হয়েছে কয়েকবার। ফলে, খরচের চেয়ে দ্বিগুণ লাভ হতে পারে বলে রামপদ জানান।
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার চণ্ডীবর গ্রামের পাকা রাস্তার পাশেই রামপদ বিশ্বাসের এ বিশাল বাগান। জানা গেলো ২০১৮ সালে তিনি প্রথমে বারী-১ মাল্টা ও কললা লেবুর প্রায় ২২ শ’ গাছ লাগান। কিন্তু চার বছর চাষাবাদের পরও তেমন ভালো ফলন না হওয়ায় আগের গাছ সব কেটে দিয়ে ২০২২ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে চুয়াডাঙ্গা জেলার এক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে ভিয়েতনাম থেকে আমদানীকৃত উন্নতমানের বারোমাসী ভিয়েতনামী প্রায় ২২ শ’ চারা রোপন করেন। প্রতিটি চারা ৫০০ টাকা করে দাম নেয়। রোপনের ৬ মাসের মাথায় ফল ধরতে শুরু করে। দ্বিতীয় বছরেই প্রতিগাছে একমণ থেকে দুইমণ মাল্টা ও কমলা ধরেছে। মাল্টাগুলো বাজারে বিক্রি হওয়া মাল্টার চেয়েও আকৃতিতে বড়ো।
এ ফল দু’টি উৎপাদনে জৈব সারের পাশাপাশি প্রচলিত রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয়। প্রতিটি গাছে এক থেকে তিন কেজি সার ব্যবহার করা হয়েছে। মাঝেমধ্যে নানা ধরনের কীটনাশক ও ভিটামিন স্প্রে করা হয়। নিয়মতান্ত্রিকভাবে সার ব্যবহারের কারণে ফলগুলো বেশ পুষ্ট হয়েছে। ফলের বাগানটি নিয়মিত পরিচর্যার জন্য লোক নিয়োগ দেওয়া রয়েছে। গ্রীষ্মকালের জন্য রয়েছে সেচের ব্যবস্থা।
এই বাগান দেখতে বিভিন্ন সময়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ঊর্র্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এসেছেন। তারা খুশি হয়েছেন দৃষ্টিনন্দন এ বাগান দেখে।
রামপদ বিশ্বাসের ছোটভাই ঢাকার এলিয়েন ফার্মা ও জুপিটার হেলথ কেয়ারের মালিক শিল্পপতি সুকুমার বিশ্বাস বলেন, অনেকটা সখের বসেই এ বাগানটি করা। এলাকার লোকজন আম, জাম, কাঁঠাল লিচু প্রভৃতি দেশীয় ফলের বাগান দেখেছে। গাছ থেকে সেসব ফল কিভাবে তুলতে হয় তা জানে, কিন্তু বাজারে বিক্রি হওয়া মাল্টা বা কমলা লেবু কিভাবে গাছে ধরে বা সে ফল কিভাবে তুলতে হয় তা জানে না। তাই আমার ইচ্ছা হলো সম্পূর্ণ নতুন ধরনের দু’টি ফলচাষ এলাকার মানুষ দেখবে, নিজে হাতে ছিড়ে খাবে। এটার মধ্যে আলাদা একটা তৃপ্তি আছে। তাই নতুন ধরনের একটা চাষ এলাকায় নিয়ে এলাম। চুয়াডাঙ্গার একজন ব্যবসায়ী সরাসরি ভিয়েতনাম থেকে এগুলো ইমপোর্ট করে। তার কাছ থেকেই চারাগুলো সংগ্রহ করা।

               

সর্বশেষ নিউজ