অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যেসব সংস্কার প্রয়োজন সেগুলো অবশ্যই করা উচিত। তবে সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। কিন্তু কেউ যদি মনে করেন ‘আমরাই সব সংস্কার করে ফেলবো’, সেটা হবে না। এটা পারাই যায় না বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলামের খান।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ১২ দলীয় জোট আয়োজিত ‘৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস গণতন্ত্র উত্তরণে নব দিগন্তের সূচনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, সংস্কারের কথা যারা বলেন তারা নতুন কিছু বলছেন না। কারণ, এই সংস্কার যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। এই সংস্কারের কথা আমরা বহুবার বলেছি। আমরা বিশ্বাস করি, সব সংস্কার এইবারেই করে ফেলা যাবে এমন কোনো কথা না। এমন কি এরপর যে সরকার আসবে তারাও সব করে ফেলতে পারবে এমনো কোনো কথা না।
তিনি বলেন, আমরা আজকে যেটা করছি ১০ বছর পরে আমরাই বলতে পারি, এটির নতুন করে সংস্কার দরকার। কাজেই সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। কেউ যদি মনে করে আমরাই সব সংস্কার করে ফেলবো, সেটা হবে না; এটি পারাই যায় না।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের যে দায়িত্ব তারা সেটাই পালন করুন। অর্থাৎ একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যেসব সংস্কার প্রয়োজন এবং দেশের জনগণের দৈনন্দিন সংকট সমাধানের জন্য যা যা ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে যা যা করা প্রয়োজন তার সবই করতে পারেন। এমনকি একটি নির্বাচিত সরকার এসে কী কী করলে ভালো, সেরকম পরামর্শ থাকলে সেটাও তারা বলতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের পতনের পর গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠাই মূল প্রায়োরিটি। এটি আমাদের মনে রাখতে হবে। জনগণের দৈনন্দিন সমস্যা সমাধানতো করতেই হবে। এটিতো স্বাভাবিক ব্যাপার। এটি যে যখন ক্ষমতায় থাকবে তার করতেই হবে; এটি তার দ্বায়িত্ব। আমি আবার বলি এই সরকার আমাদের সরকার। আমরা এই সরকারের সফলতা চাই, আমরা সহায়তা করতে চাই।
‘কিন্তু আমার কাজ আমাকে বুঝতে হবে। আমি সভার প্রধান অতিথি বলেই সভার সমাপ্তি ঘোষণা করতে পারি না। এটিতো ঠিক না। যার যার কাজ তাকে বুঝতে হবে। একটি নির্বাচিত সরকারের কাজ আর একটি অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ কী সেটিও বুঝতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, অত্যন্ত যোগ্য মানুষের কাছে আমরা দায়িত্ব দিয়েছি, অত্যন্ত বিজ্ঞ মানুষদের কাছে আমরা দায়িত্ব দিয়েছি, তারা তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন।
৭ নভেম্বর নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা ৭ নভেম্বরের পরিবর্তনের ফলে একজন নতুন নেতা পেয়েছিলাম, জিয়াউর রহমান বীর উত্তম। তার হাত ধরে আমরা শুধু একদলীয় স্বৈরশাসকের গোরস্থানের ওপর বহুদলীয় গণতন্ত্রের বাগান রচনা করিনি; আমরা দেশের মানুষকে খাদ্য উৎপাদনেও উদ্দীপ্ত করতে পেরেছি, উৎপাদন বাড়াতে পেরেছি। আমরা নতুন শিল্পকারখানা গড়তে পেরেছি। আজকের বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল যে তিনটি স্তম্ভ তার প্রতিটি আমরা অর্জন করেছি ৭ নভেম্বরের জন্য।
১২ দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- জাগপার সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাসেম, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মো. ফারুক রহমান, বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব শাহ আহমেদ বাদল ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম প্রমুখ।