রাজধানীর সদরঘাটে ঢাকা নদীবন্দরে একটি লঞ্চের মালিকানা নিয়ে দুপক্ষের বিরোধে যে কোনো মুহূর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বেধে যেতে পারে। একপক্ষ আদালতের নির্দেশে নৌপুলিশ নিয়ে শুক্রবার বিকালে লঞ্চটি দখল করতে গেলে অন্যপক্ষ লোকজন নিয়ে হট্টগোল শুরু করে। এতে চরম বিড়ম্বনায় পড়েন যাত্রীরা।
সরেজমিন দেখা যায়, সদরঘাট নৌথানার ওসি কাইউম সরদারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল বিকাল ৪টার দিকে ১৬ নম্বর পন্টুনে বাঁধা ভোলা ঘোষের হাটগামী এমভি সাব্বির-৩ লঞ্চটি জনৈক রাসেল নামে একজনকে বুঝিয়ে দিতে যায়। এ সময় লঞ্চে থাকা প্রায় দুই শতাধিক যাত্রীকে নামিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে বর্তমান মালিক মিজানুর রহমানের লোকজন উপস্থিত হলে শোরগোল বেধে যায়। এ সময় উভয়পক্ষ আদালতের নির্দেশনার কাগজ দেখায়। এ কারণে যাচাই বাছাইয়ের সময় নেওয়া হয়। পরে লঞ্চটি নির্ধারিত সময়ের আধাঘণ্টা দেরি করে গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
লঞ্চে থাকা মোক্তার হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, পুলিশ এসে হঠাৎ লঞ্চটি যাবে না বলে ঘোষণা দিয়ে যাত্রীদের নেমে যেতে বাধ্য করে। তাই অন্য লঞ্চে উঠি। পরে সাব্বির-৩ লঞ্চ ছাড়ার ঘোষণায় ব্যাগেজ মালপত্র টেনে আবার উঠি। তিনি বলেন, উভয়পক্ষের মারমুখী অবস্থানে থাকায় যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এ অবস্থা নিরসন না হলে যেকোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ঘ হতে পারে।
ওসি কাইউম সরদার বলেন, ২০১৮ সালে লঞ্চটি রাসেল নামে এক ব্যক্তির কাছে বিক্রয়ের চুক্তি করেন মালিক মিজানুর রহমান। বিষয়টি একপর্যায়ে আদালত পর্যন্ত গড়ায়। বাদী (ক্রেতা) রাসেল ঢাকার সিনিয়র সহকারী জজ ষষ্ঠ আদালতে মামলা করেন। ওই মামলার একটি আদেশে বাদীকে জাহাজটি বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে আমরা লঞ্চে গেলে তারা (মালিক) উচ্চ আদালতের একটি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশের কপি দেখালে আমরা বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য সময় নিয়ে চলে আসি। তবে যাত্রী হয়রানির বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে আরিফ অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ২০১৮ সালে জনৈক রাসেলের কাছে আমাদের দুটি জাহাজ বিক্রয়ের চুক্তি হয়। কিন্তু চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করায় আমরা তার কাছ থেকে জাহাজগুলো বুঝে নেই। পরে তিনি আমাদের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে মামলা দিলে ওই মামলা উচ্চ আদালত স্থগিতাদেশ দেন। কিন্তু ওই স্থগিতাদেশ থাকা অবস্থায় আমাদের না জানিয়ে পুলিশ আজকে নিম্ন আদালতের আরেকটি আদেশ নিয়ে লঞ্চটি জিম্মায় নিতে আসে।