শনিবার দেশের আট বিভাগে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে। গতকাল সন্ধ্যায় আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রবিবারের মধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের আরো অন্তত ১৭টি জেলা বন্যায় প্লাবিত হতে পারে। এসব এলাকায় বন্যার তীব্রতা বাড়ছে, নদীগুলোর পানি আরো বাড়তে শুরু করেছে। সেইসঙ্গে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে। সারাদেশের ৯৫টি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে সিলেট অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। এর আগে শুক্রবার সিলেট অঞ্চলের ৮০ শতাংশেরও বেশি বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। এরপর শনিবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টিতে বাকি অংশেও পানি উঠে।
সুনামগঞ্জের অধিকাংশই প্লাবিত হয়ে গেছে। এসব অঞ্চলে বানভাসি মানুষ আশ্রয়ের জন্য নিরাপদ জায়গা খুঁজছে। তাদের উদ্ধার কাজে মাঠে নেমেছ ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ বলেন, রবিবার রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বেশির ভাগ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এ ছাড়া পরবর্তী দুই দিন (মঙ্গলবার পর্যন্ত) এই বৃষ্টিপাতের ধারা অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর বৃষ্টিপাত কমতে পারে বলে জানান এই আবহাওয়াবিদ।
বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, সিলেট, কানাইঘাট, সুনামগঞ্জ ও দিরাইয়ে সুরমা নদী, কুড়িগ্রামে ধরলা, চিলমারিতে ব্রহ্মপুত্র, লরেরগড়ে জাদুকাটা, কলমাকান্দায় সোমেশ্বরী নদীর পানি, নাকুয়াগাঁওয়ে ভোগাই বিপতসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা নদীর পানিও বাড়ছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান ভুঁইয়া বলেন, গত তিন দিনে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে প্রায় আড়াই হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এখানে আরো বৃষ্টি হবে। ভারতের মেঘালয় ও আসামে আরো দুই দিন অতিবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার বৃষ্টির পানি বাংলাদেশের সিলেট ও কুড়িগ্রাম দিয়ে নেমে আসবে।