৪, অক্টোবর, ২০২৩, বুধবার

স্বপ্নের পদ্মা সেতু: আগামীকাল উন্মোচন হবে ১৯ জেলার অর্থনীতির দ্বার

স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হবে আগামীকাল শনিবার (২৫ জুন)। দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষা শেষে এই সেতু আগামীকাল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং রবিবার (২৬ জুন) যান চালাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। যা দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। দূরীভূত হবে ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, গোপালগঞ্জ, বরিশাল পটুয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলের ১৯ টি জেলার মানুষের যাতায়াতের দুর্ভোগ এবং পরিবর্তন হবে দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতি।

দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষায় পদ্মা সেতু অভাবনীয় ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে ঈদের ছটিতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও মাওয়া ঘাটে পদ্মা পারাপারের সময় প্রতি বছরই বড় ধরনের দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলে যোগ হতো দক্ষিণাঞ্চলের অনেক মানুষ। কাজেই বলা যায় পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জন্য এক বড় পাওয়া। এদিন ২৫ জুন সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সেতুর উদ্বোধন করবেন। তীব্র খরস্রতা এই পদ্মা নদীকে কীর্তনাশা ও বলা হয়।

এই পদ্মার পেটে বিলীন হয়েছে হাজারও মানুষের স্বপ্ন। নদীর বুকে নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ হাজার কোটি টাকায় ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুর কাজ ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে উদ্বোধন করেছিলেন শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে বসে প্রথম স্প্যান। মাঝে ২২টি খুঁটির নিচে নরম মাটি পাওয়া গেলে নকশা সংশোধনের প্রয়োজন হয়। তাতে বাড়তি সময় লেগে যায় প্রায় এক বছর। করোনাভাইরাস মহামারী আর বন্যার মধ্যেও কাজের গতি কমে যায়। সব বাঁধা পেরিয়ে অক্টোবরে বসানো হয় ৩২তম স্প্যান।

এরপর বাকি স্প্যানগুলো বসানো হয়ে যায় অল্প সময়ের মধ্যেই। ঠিক পাঁচ বছরের মাথায় পূর্ণ আকৃতি পায় স্বপ্নের সেতু, যুক্ত হয় পদ্মার দুই পাড়। আর এই সেতুর কারণে ভাগ্যের দুয়ার খুলছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের। খুলনা ও বরিশাল বিভাগসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলাকে এতদিন বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল পদ্মার বিপুল জলরাশি। উন্নয়নের সামনে যে পদ্মা এতকাল দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিলো সেখানে বাস্তবে রূপ নিয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু।

দুই যুগের বেশি সময় ধরে পদ্মার ওপর একটি সেতুর অপেক্ষায় ছিলেন অবহেলিত দক্ষিণা-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ। তাই পদ্মা সেতু ‍উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা ঢাকা বিভাগের পাঁচ জেলাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জন্য অন্যরকম আনন্দের। তারা বলছেন, সেতুটি চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থার যে উন্নতি ঘটবে, তা ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিপুল প্রসার ঘটাবে।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে গোটা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের নতুনমাত্রা যোগ করবে সেতুটি।সেতুর দুইপাড়ে গড়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র। শরীয়তপুর প্রান্তের জাজিরায় গড়ে উঠছে রেস্টুরেন্ট, রিসোর্ট, হোটেলসহ বিলাসবহুল বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান।

সর্বশেষ নিউজ