সাইফুল ইসলাম রুদ্র, নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি: ব্রাহ্মনবাড়ীয়া থেকে ছেড়েই বেপরোয়া রূপ নেয় লাবিবা পরিবহন। ভৈরব থেকে ছেড়ে এসে মাহমুদা বাস এলাকা অতিক্রম করে লাবিবা পরিবহন সর্বোচ্চ আগ্রাসী রূপ নেয়। গত কিছু দিন আগেও নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার গোকরনগর এলাকার লাল মিয়া পাম্বের সামনে হিংস্র গতির কারণে রং রোডে গিয়ে ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
এতে প্রায় ৫/৬ জন গুরতর আহত হয়, অল্পের জন্য বড় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গেছেন অসংখ্য মানুষ। নরসিংদীর বিভিন্ন বাস স্ট্যান্ডের বিভিন্ন পয়েন্টে শুধু বেপরোয়া গতি নয়, ওভারটেক করতে না দিলে সামনের গাড়ির চালককে শাসান লাবিবা পরিবহনের চালক। এমনকি পুলিশকে মাসিক মাসুহারা দিয়ে চালাচ্ছে এই লাবিবা পরিবহন বললেন ৯৮ এর চালক।
ট্রাক এবং লাবিবা পরিবহনের মুখোমুখি সংঘর্ষে স্থানীয় সাংবাদিক তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলে ঐ সাংবাদিককে বিভিন্ন মামলা দিয়ে ফাসিয়ে দিবে বলে হুমকি সহ গুম করার হুমকি দিচ্ছে। অথচ এই নরসিংদীতে বিগত বছরে প্রায় ১০ টিরও অধিক মারাত্মক দূর্ঘটনা ঘটিয়েছে এই লাবিবা পরিবহন।
এদিকে ভৈরব থানার তৎকালীন হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান সংবাদকর্মী রুদ্রকে বলেন, লাবিবা পরিবহনের অনেক অভিযোগ আমরা পেয়েছি। কিন্তু লাবিবা পরিবহনের গাড়ীটি রং রোডে গিয়ে অপর প্রান্তে থাকা ট্রাকের সাথে মুখোমুখি লাগিয়ে দেয়। এতেই বিরাট দূর্ঘটনা ঘটে।
এই লাবিবা পরিবহনের বেপরোয়া চালক আর গতির গাড়ির যাত্রী হয়ে ব্রাহ্মনবাড়ীয় থেকে মহাখালী পর্যন্ত দেখা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে লাবিবা পরিবহনকে একটি গাড়িও ওভারটেক করতে পারেনি। কিন্তু লাবিবা পরিবহনের বাসটি ওভারটেক করে গেছে শত শত গাড়িকে। এর মধ্যে অন্তত অর্ধশত ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেক করেছে লাবিবা পরিবহন। আবার সেকেন্ডের চেয়ে কম সময়ের ব্যবধানে দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে এমন ঘটনাও ঘটেছে অন্তত ১০ বার, জানিয়েছেন এই গাড়ীতে থাকা যাত্রী কাউসার আহম্মেদ।
লাবিবা পরিবহনের বাসের ক্ষিপ্র গতির কাছে যেন অসহায় বাকি সব বাস মাইক্রোবাস ও অন্যান্য যানবাহন। স্প্রিডব্রেকার, মোড় আর পুলিশের সাইনবোর্ড সিগন্যালকে তুচ্ছ করেই বাসটি চলছে মহাখালীর পথে। মহাসড়কে ৮০ কিলোমিটারের উপরে গতি তোলার নিয়ম নেই কিন্তু লাবিবা পরিবহনের বাসটিকে কিছুক্ষণ পরপরই ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে তুলেছেন চালক-এমনটা দেখা গেছে।
লাবিবা পরিবহনের মালিক লিটনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায় নি। এক পর্যায়ে সংবাদকর্মী রুদ্রকে লাবিবা পরিবহনের দায়িত্বে থাকা এক কর্মচারী সুজন জানান, আমরা পুলিশকে মাসিক মাসুহারা দিয়ে হাইরোডে চালাচ্ছি গাড়ি। আমরা কীভাবে গাড়ী চালাবো সেটাই আমরাই ভালো বুঝি, কারো কাছে জবাবদিহি করতে আমরা বাধ্য নই, জানিয়েছেন এয়াপোর্ট কাউন্টার থেকে। এই লাবিবা পরিবহনের অনিয়মের বিষয়ে ও সড়ক দূর্ঘটনার বিষয়ে প্রমাণ সহ আগামী ৭ পর্বে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হবে। এদিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক রোডের হাইওয়ে জুনের পুলিশ সুপার সংবাদকর্মী রুদ্রকে বলেন, লাবিবা পরিবহনের অনিয়মের বিষয়টি যেহেতু আমি শুনেছি সঠিক তদন্ত করে অতি দ্রুত আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি। তবে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে এই পরিবহনের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।