৩০, অক্টোবর, ২০২৪, বুধবার
     

জন্ম সনদ না দিলে জনপ্রনিধির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে ইসি

ভোটার তথ্য সঠিক ও নির্ভুল ভাবে হালনাগাদ করতে বর্তমানে ভোটার তালিকা প্রণয়ন আইন অনুযায়ী, ফরম-২ এ জন্ম সনদ নম্বর দিতে হয়। এক্ষেত্রে অবশ্যিকভাবে একজন নাগরিকের জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রয়োজন।এক্ষেত্রে রাজধানীসহ সারাদেশেই হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ নাগরিকরা। তবে বিষয়টি ইসির নজরে আসায় কাউকে ইচ্ছকৃত ভাবে হয়রানি করা হলে সংশ্লিষ্ট জনপ্রনিধির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভোটার তালিকা প্রণয়ন আইন অনুযায়ী, ফরম-২ এ জন্ম সনদ নম্বর দিতে হয়। এক্ষেত্রে অবশ্যিকভাবে একজন নাগরিকের জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রয়োজন। কিন্তু ভোটার হতে ইচ্ছুক অনেকের সকল কাজগ পত্র থাকার পরও শুধু জন্ম সদন নেই বলে তারা ভোটার হতে পারছে না।

এই অবস্থায় প্রতিনিয়ত নাগরিকরা জন্ম সনদ ছাড়াই ভোটার হাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা থানা নির্বাচন কার্য়লয়ে আসনে। কিন্তু ইসির মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আইনের করণে হাত বাঁধা। তারা চাইলেও আইনের বাইরে যেয়ে কাউকে ভোটার করে দিতে পারেন না।
চলমান ইসির বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদে এই সমস্যা দিনকে দিন জটিল হয়ে পড়েছে ।

এক্ষেত্রে বর্তমানে ইসির বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালানাগাদের কর্যক্রমের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার শঙ্কাও প্রকাশ করছেন কর্মকর্তারা। সম্প্রতি এই বিষয়গুলোই ওঠে এসেছে ইসির মাসিক সমন্বয় সভায়। সেখানে কোনো কোনো আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা বলেছেন তার এলাকায় কোনো সমস্যা নেই। আবারো কোনো আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জানিয়েছেন সেখানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জন্ম সনদ দিতে গড়িমসি করেন, অনেকেই দেন না।

ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার স্বাক্ষরিত ওই সভার কার্যবিবরণীতেও বিষয়টির উল্লেখ করা হয়েছে। কার্যবিবরণীতে এতে বলা হয়েছে- বরিশালের আঞ্চলিক নির্বাচন জানান, অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রাপ্যতায় সমস্যা হওয়ায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। রংপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জানান যে, প্রথম পর্যায়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণ কার্যক্রমে অনলাইন জন্ম সনদ পেতে সমস্যা হলেও স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধির সঙ্গে সভা করে বর্তমানে তা সমাধান করা হয়েছে।

ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জানান যে, সাভার ও গাজীপুর এলাকার জনপ্রতিনিধিগণ অনলাইন জন্ম নিবন্ধন দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। বিধায় কোনো কোনো উপজেলায় প্রাক্কলিত ভোটারের তুলনায় ভোটার হওয়ার হার অনেক কম হচ্ছে। সভায় এই আলোচনার পর সংশ্লিষ্ট জনপ্রনিধিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মঙ্গলবার (০২ আগস্ট) জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ুন কবীরকে নির্দেশনাও দিয়েছেন।

এতে বলা হয়েছে- তথ্য সংগ্রহ হালনাগাদ কার্যক্রমে কোনো জনপ্রতিনিধি আবেদনকারীর জন্ম নিবন্ধন সনদ ইস্যু না করলে বা হয়রানি করলে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধির তথ্য মহাপরিচালক, এনআইডি কে লিখিতভাবে জানাতে হবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ বরাবর পত্র প্রেরণ করতে হবে। এছাড়া সকল আঞ্চলিক কর্মকর্তাকে এ নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালানোরও নির্দেশনা দিয়েছেন ইসি সচিব।

এবার হালানাগাদে ভোটার বৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ ৮৪ লাখ ৯৬ হাজার ৫২৬ জন ব্যক্তিকে হানাগাদের অন্তর্ভূক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সংস্থাটি। চলমান ভোটার হালনাগাদে ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার পূর্বে যারা জন্মগ্রহণ করেছেন, তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এদের মধ্যে যাদের বয়স যখন ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তখন তারা স্বয়ংক্রিভাবে ভোটার তালিকায় ‍যুক্ত হবেন।

আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যে হালনাগাদের কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্য নিয়ে এগুচ্ছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে নির্বাচন কমিশনের কাছে মোট ১১ কোটি ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ১০ জন ভোটারের তথ্য রয়েছে। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৯ জন এবং মহিলা ভোটার ৫ কোটি ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ২৭ জন। হিজড়া ভোটার আছে ৪৫৪ জন।

               

সর্বশেষ নিউজ