২৩, ডিসেম্বর, ২০২৪, সোমবার
     

দুই দিন পর সীমান্তের ওপারে ফের গোলাগুলির বিকট শব্দ!

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের তুমব্রু এলাকার ওপারে ফের প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দের খবর পাওয়া গেছে। ২ দিন বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার থেকে ফের শোনা গেল গোলাগুলির বিকট শব্দ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের তুমব্রুর ওপারের মিয়ানমার অভ্যন্তরে তাদের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) বিরুদ্ধে সেই দেশের সেনাবাহিনী-বিজিপি যৌথভাবে অভিযান চালাচ্ছে।

সীমান্তে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় সেখানের সীমান্ত সড়কে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। সীমান্তের এলাকাবাসীরা মনে করেন এসব ঘটনা ঘটতে থাকলে আবারো রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে।

এ আশঙ্কায় বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিজিবিও তাদের তৎপরতা আগের চেয়ে বহুগুণ বৃদ্ধি করেছে।

সীমান্তের ওপারের সূত্রগুলো জানিয়েছে, মিয়ানমার সরকারের সীমান্তরক্ষী, সেনাবাহিনীর, পুলিশ ও দুর্বৃত্তদের অমানবিক আচরণের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আতঙ্ক বিরাজ করছে। আর এদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মধ্যে কেউ কেউ ধারণা করছেন এ ঘটনার সূত্র ধরে ফের ওই দেশে নতুনভাবে রোহিঙ্গাবিরোধী রক্তাক্ত অভিযানের আশঙ্কা করছে তারা।

বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী মিয়ানমারে সরকারি বাহিনী ও আরাকান আর্মির (এএ) মধ্যকার লড়াই অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) ভোরে সীমান্তের ওপারে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। তুমব্রু বাজারের বিপরীতে মিয়ানমার সীমান্তে এসব গুলির শব্দ হচ্ছে। এছাড়া রেজু সীমান্তের কাছে হেলিকপ্টার টহল দিতে দেখা গেছে। সকাল থেকে সীমান্তের আওয়াজ শোনার পর সীমান্তের নো-ম্যান্স ল্যান্ডের কাছাকাছি বসবাসরত রোহিঙ্গারা ও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা গিয়েছে।

গত দুই সপ্তাহ ধরে শুরু হওয়া দুই পক্ষের ওই হামলায় পুলিশ – সেনাসহ আরাকান আর্মি হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রাখাইনে মংডু, বুচিদং, ওয়ালি দং ও রাচিদং অঞ্চলগুলোতে বসবাসরত রোহিঙ্গারা ও স্থানীয় রাখাইনদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ জানিয়েছেন, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘুমধুমের তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, ফাত্রাঝিরি, রেজু, আমতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

এদিকে সেনাবাহিনীর প্রকৌশল ব্যাটালিয়ন ২০ ইসিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল সৈয়দ রিয়াসত আজিম জানিয়েছেন, সীমান্ত উত্তেজনার কারণে গত ১৫ দিন যাবত সীমান্ত সড়কের নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সড়কটির নির্মাণ কাজ পুনরায় চালু হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা ফেরদৌস জানিয়েছেন, সীমান্তে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সর্তক অবস্থান জোরদার করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজনদের সীমান্ত এলাকায় না যেতে পুলিশের পক্ষে থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জেনেছি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু বরাবর সীমান্তের মিয়ানমার অভ্যন্তরে অজস্র গুলির শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় বসবাসরতরা। নিরাপত্তার কারণে সীমান্তের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ বিপাকে পড়েছে। সীমান্ত এলাকার পাহাড়গুলো থেকে গাছ, বাঁশ, লাকড়ি সংগ্রহকারী দিনমজুরেরা এখন সেখানে যেতে পারছে না।

অন্য এক সূত্রে জানা যায়, বিভিন্নভাবে আতঙ্কিত রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছে বলে একটি সূত্র জানায়।

কিন্তু বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বিজিবি সদস্যরা তৎপরতা আরও জোরদার করায় রোহিঙ্গাদের পক্ষে সহজে অনুপ্রবেশ সম্ভব হয়ে উঠছে না। গোলাগুলির আওয়াজের ভয়ে কিছু কিছু রোহিঙ্গা পরিবার বাঁচার তাগিদে তারা পাহাড়ের গহীন অরণ্যে আশ্রয় নিয়েছে।

               

সর্বশেষ নিউজ