২৭, ডিসেম্বর, ২০২৪, শুক্রবার
     

চাচীকে বিয়ে করে শারীরিক সর্ম্পক, এরপর অস্বীকৃতি ছাত্রলীগ নেতার

পবিত্র কোরআন মাথায় নিয়ে এবং হুজুর ডেকে বিয়ে করেন দুই সন্তানের জননীকে। তিনি আবার দুঃসম্পর্কের চাচীও। একাধিক ভাড়া বাসায় দাম্পত্যজীবন যাপন করার মধ্যে অন্তঃসত্তা হলে জোরপূর্বক দুই বার গর্ভপাত করান। তৃতীয় দফা গর্ভপাত করতে রাজি না হওয়ায় স্ত্রীর মার্যাদা দিতে অস্বীকার করে যাচ্ছেন। এমন অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজারের নবগঠিত উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শোয়াইবুল হকের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় গত আগস্টের ১৮ তারিখ ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে ঈদগাঁও থানায় ওই ছাত্রলীগ নেতাকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা শোয়াইবুল হক উপজেলার দক্ষিণ সাতজোলাকাটা গ্রামের প্রবাসী এচারুল হকের পুত্র। ভুক্তভোগী নারী একই এলাকার বাসিন্দা মৃত আবুল শামার মেয়ে।

ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করে বলেন, ‘পবিত্র কোরান মাথায় তুলে ধরে শপথ করে যৌন সম্পর্ক করে। ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে চট্টগ্রামে এক হুজুর ডেকে ‘বিয়ে’ করে শোয়াইবুল হক। কিন্ত রেজিস্ট্রেশন করতে বললে নানা ধরণের প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তা এড়িয়ে যায়। এভাবে করে সে তিন দফা আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে বাধ্য করেছে।

এখনও আমি ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এই মুহুর্তে সে আমাকে বৈবাহিক সম্পর্কের সামাজিক মর্যাদা না দিয়ে আত্মগোপন করেছে। সমস্ত যোগাযোগ নাম্বার বন্ধ করে দিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। সেই সাথে তার পিতার ইন্ধনে এখন প্রবাসে পাড়ি জমানোর তোড়জোড় শুরু করেছে।’ তার কারণে ওই নারীর আগের সংসারটি ভেঙ্গে যায় বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।

জানা যায়, ওই নারীর আগের একটি সংসার ছিলো। এতে দুটি সন্তানও রয়েছে। ছাত্রলীগ নেতা শোয়াইবুল হকের সাথে পরকিয়া প্রেমের সম্পর্কের জেরে ওই সংসার ভেঙ্গে যায়। এরপর থেকে ওই মেয়ের সাথে অভিযুক্ত যুবক শোয়াইবুল হকের পারিবারিক ভাবেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো। কিন্ত দুর্ভাগ্যজনক ভাবে বিয়ের কথা পাকাপাকি হওয়ার দুই মাসের মাথায় মেয়েটির পিতা মারা যায়। এটাকে সুযোগ হিসেবে ধরে নিয়ে অভিযুক্ত যুবক শোয়াইবুল হক মেয়েটির সাথে প্রতারণামূলক যৌন সম্পর্ক গড়ে তুলে। এ এখন পর্যন্ত তিন দফা গর্ভের সন্তান নষ্ট করেছে। বর্তমানে মেয়েটি আবারও অন্তঃসত্ত্বা হলে তাকে সামাজিক মর্যাদা দিতে চাপ সৃষ্টি করে।

অভিযুক্ত শোয়াইবুল হক ইসলামাবাদ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়ীত্বে রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবুহেনা বিশাদ। তিনি বলেন, ‘গোপনে এক নারীকে বিয়ে করে অন্তঃসত্ত্বা করে সামাজিক মার্যাদা না দেওয়ার অভিযোগটি শুনেছি দীর্ঘদিন আগে। বিষয়টি নিয়ে একবার রাজ্জাক মেম্বারসহ আমরা একটা শালিশী বৈঠকও করি। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় যেকোনভাবে এটা সমাধান করার জন্য শোয়াইবুল হককে অনুরোধ করা হয়। তিনি সবসময় বিষয়টি অস্বীকার করে এড়িয়ে যাওয়ায় এটি আর সমাধান করা হয়নি।’

তিনি ছাত্রলীগের কর্মকান্ডেও প্রায় নিষ্ক্রিয় রয়েছে বলে দাবি করে বিশাদ আরোও বলেন, ‘সিনিয়র নেতাদের অনুরোধে শোয়াইবুল হককে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ শুনা যায়। কেন্দ্র থেকে আমাদের কমিটি স্থগিত করে দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোন ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।’ হয়তো এবার বিষয়টি জেলা ছাত্রলীগ দেখবে বলে জানান ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা শোয়াইবুল হক বলেন, ‘ওই নারী দুই সন্তানের জননী। তার সাথে আমার পারিবারিক দ্বন্দ্ব থাকার কারণে আমাকে ফাঁসাতে তিনি অপচেষ্টা করছেন বলে তিনি দাবী করেন।’

এবিষয়ে ইদগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম জানান, ভিকটিমের বক্তব্য ও যাবতীয় তথ্য উপাত্ত যাচাই করে মামলা নিয়েছি। অন্যদিকে অভিযুক্ত যুবক ৬ মাসের জামিনে আছে। এখন মেডিক্যাল রিপোর্ট এবং ডিএনএ টেস্ট রিপোর্ট আসার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে।

               

সর্বশেষ নিউজ