২২, ডিসেম্বর, ২০২৪, রোববার
     

মানুষের মলিন মুখের চেয়ে নিরানন্দের আর কিছু নেই

ধোলাইপাড় থেকে গ্লোরী পরিবহনে উঠলাম, গন্তব্য জাজিরা। বাসে উঠে মাঝখানেই দুটো সিট খালি পেলাম। আরামসে বসে আছি, পোস্তগোলা আসতেই একজন যাত্রী উঠে আমার পাশে বসতে চাইলেন, আমি জানালার পাশে সরে গেলাম, ভদ্রলোক মনে হয় কিছুটা ব্যথিত হলেন, হয়তো তিনি জানালার পাশে বসার জন্য আগ্রহী ছিলেন।

ইতোমধ্যে রুটিওয়ালা উঠে রুটি বিক্রি শুরু করেছেন, একপিস ৫০টাকা, দুই পিস ১০০ টাকা। ভদ্রলোক বললেন ৮০ টাকা দিলে দুইপিস কিনবেন, রুটিওয়ালা মামা বললেন ৯০ টাকা দেন। ভদ্রলোক বললেন, ৮০ টাকার বেশি তিনি দিবেন না। আমি বললাম দিয়ে দেন ভাই ১০ টাকা বেশি, এই গরমে রুটি বিক্রি! আমার কথা শুনে ভদ্রলোক কিছুটা নমনীয় হয়ে ১০ টাকা বেশি দিয়ে রুটি দুটি কিনে নিলেন।

আমার সাথে ভাবের একটা আদান-প্রদান হয়ে গেলো। ভদ্রলোক দেখলাম ছবি তুলতে খুব পছন্দ করেন, কিছুক্ষণ পরপর ডানে বামে বিভিন্ন ফ্রেমে ছবি তুলছেন, আর আমিও আগে পিছে সরে গিয়ে স্পেস দিয়ে যাচ্ছি। পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা আসতেই দেখলাম ভদ্রলোক কিছুটা অস্থির হয়ে উঠলেন, আমি বুঝলাম, পদ্মা সেতুতে তিনি ছবি তুলতে না পারলে কষ্টই পাবেন।

আমি বললাম একটা কাজ করেন, আমি তো অনেকক্ষণ জানালার পাশে বসলাম, বাতাসে মাথা ভার হয়ে গেছে, আপনি উঠে জানালার পাশে বসেন। এতক্ষণে ভদ্রলোক বেশ খুশি হয়ে গেলেন। তিনি অনেক ছবি তুললেন, সেলফি তুললেন, ভিডিও করলেন। আনন্দিত হলেন তিনি। যাত্রাপথ বা অন্য কোথাও, একজন মানুষকে আনন্দিত করতে পারাটা সত্যিই পরমানন্দের।

আসুন, আমাদের পাশের মানুষকে একটু ভালোবাসি, আনন্দের পরিবেশ তৈরি করি। মানুষের মলিন মুখের চেয়ে নিরানন্দের আর কিছু নেই, মানুষের হাসিমুখের চেয়ে সুন্দর কিছু নেই।

(ফেসবুক ওয়াল থেকে)

লেখক: কামরুল এইচ সোহেল
উপজেলা নির্বাহী অফিসার
জাজিরা,শরীয়তপুর ।

               

সর্বশেষ নিউজ