২৫, নভেম্বর, ২০২৪, সোমবার
     

অন্ধ বাঁশি বাদক রফিক পেলেন মিডিয়া ফ্রন্টলাইন থেকে কর্মসংস্থানের সহায়তা

শরীয়পতুর প্রতিনিধি :

বাঁশি বাজিয়ে চকলেট বিক্রি করা অন্ধ রফিকুল ইসলামের পেশা। বয়সের ভারে নুহ্য রফিক এখন ৭৫ পেরিয়েছেন। স্ত্রী ও স্বামী পরিত্যাক্তা মেয়েকে নিয়ে তাদের সংসার। নিয়মিত কাজে বের হতে না পারায় সংসার চলছিল টেনে হিছড়ে। বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হলে নজর কাড়ে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসনের। ইতোমধ্যে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন অন্ধ রফিককে তার ব্যবসার উপকরণ বাঁশি ও চকলেট দিয়ে সহায়তা করে। এবার অন্ধ রফিক ও তার পরিবারের কর্মসংস্থানের জন্য হাত বাড়িয়েছেন মিডিয়া ফ্রন্টলাইন। আজ ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের হল রুম থেকে তারা অন্ধ রফিকের স্বামী পরিত্যাক্তা মেয়ে মাহমুদা বেগমকে দর্জি ব্যবসা পরিচালনার জন্য সকল প্রকার মেশিন, আসবাবপত্র, কাপড় ও দর্জি দোকানের উপকরণ সহায়তা হিসেবে হস্তান্তর করেছেন।

অন্ধ রফিকুল ইসলাম বাঁশির ঝংকারে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. আবুল হাদি মুহাম্মদ শাহ পরান, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তাজুল ইসলাম, যুদ্ধাহত বীর মৃক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ তালুকদার, মিডিলা ফ্রন্টলাইনের চেয়ারম্যান শেখ নজরুল ইসলাম, কো-অডিনেটর জাকির মজুমদারসহ বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধি। মিডিয়া ফ্রন্টলাইনের সুপারভাইজর রোকনুজ্জামান পারভেজের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জিটিভির শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি মানিক মোল্যা।

উপস্থিত অতিথিবৃন্দ বলেন, আত্মসম্মানবোধ বিষর্জণ দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করতে পারতেন এই অন্ধ রফিকুল ইসলাম। কিন্তু তিনি ভিক্ষাবৃত্তিকে অপছন্দ করেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে অর্থ সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব করলে তিনি তা গ্রহণে অস্বীকার করেন। পরে তাকে ব্যবসার উপকরণ বাঁশি ও চকলেট দেওয়া হয়। এবারও মিডিয়া ফ্রন্টলাইন থেকে অর্থ প্রাপ্তি অস্বীকার করেছেন। পরে তাকে দর্জি ব্যবসার সকল উপকরণ দেওয়া হয়। সেই ব্যবসা তার স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে পরিচালনা করবেন।

অন্ধ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার চাওয়া পাওয়ার কিছুই নাই। এখনও আমি বাঁশি বাজিয়ে চকলেট বিক্রি করতে পারি। তাছাড়া আমার দ্বারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা সম্ভব না। আমার স্বামী পরিত্যাক্তা মেয়ে মাহমুদার একটি সেলাই মেশিন রয়েছে। সে বাড়িতে বসে এলাকার মানুষের কাজ করে। তার একটি দর্জি দোকান থাকলে ভালো হত। এবার মিডিয়া ফ্রন্টলাইন আমার মেয়েকে দর্জি দোকানের প্রয়োজনীয় সকল মালামালসহ মেশিন কিনে দিয়েছে। এতেই আমার উপকার হবে।

রফিকের মেয়ে মাহমুদা জানায়, সে সন্তান নিয়ে পিতার বাড়িতে থাকে। তিনি যখন ঢাকায় পোশাক তৈরী কারখানায় কাজ করতেন তখন থেকেই স্বপ্ন ছিল নিজের একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের। এবার সে মিডিয়া ফ্রন্টলাইনের সহযোগিতায় একটি দর্জি দোকান ও মেশিনসহ মালামাল পেয়েছে। আয়রোজগার করে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের পাশে দাঁড়াতে পারবেন। তারা সকলে মিডিয়া ফ্রন্টলাইন, আয়োজক ও অতিথিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন।

               

সর্বশেষ নিউজ