বহু আলোচনা আর নাটকীয়তার পর অবশেষে সেনানিবাস নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্রের দেশ পাকিস্তানে সরকার গঠন নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল। ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে দীর্ঘ দর-কষাকষির পর অবশেষে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন ও বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পিপিপি।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে ইসলামাবাদ থেকে দেওয়া হয় এমন ঘোষণা। ফলে ইমরান খানকে কারাগারে রেখেই নতুন সরকার গঠন নিয়ে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা কাটল।
পাকিস্তান পিপলস পার্টি তথা পিপিপি ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ তথা পিএমএল-এন এর সমঝোতা অনুযায়ী পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন নওয়াজ শরিফের ছোটভাই শাহবাজ শরিফ ও প্রেসিডেন্ট হবেন বিলাওয়ালের বাবা ও পিপিপির কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলি জারদারি।
এক সংবাদ সম্মেলনে বিলাওয়াল জানান, পিপিপি এবং পিএমএল-এন এখন পরবর্তী সরকার গঠনের অবস্থানে রয়েছে। এ সময় পাকিস্তানে চলমান সংকট থেকে জনগণকে মুক্তি দিতে পিপিপি ও পিএমএল-এন এর জোট সরকার সক্ষম হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিলাওয়াল। এ সময় বাবা আসিফ আলি জারদারিকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সমর্থন করায় পিএমএল-এনকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
সমঝোতার পর পিএমএল-এন সভাপতি শাহবাজ শরিফ জানান, দুই দলের জোটের কারণে কেন্দ্রে সরকার গঠনের মতো প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন অর্জন করেছে তার দল। এ সময় জারদারিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করার মতো প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোটও জোটের রয়েছে বলে জানান শাহবাজ। পাশাপাশি পরবর্তী সরকারের থাকা মিত্র দল মুত্তাহিদা কাওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ-কায়েদকে ধন্যবাদ জানান পিএমএল-এন সভাপতি।
বিলাওয়াল জানান, শুধু পাকিস্তানের স্থিতিশীলতার জন্য তারা জোট সরকার গঠনে সম্মত হয়েছেন। তবে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় তারা কোন কোন মন্ত্রণালয়গুলো নেবেন বা পাবেন সেটি পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন পিপিপি চেয়ারম্যান।
এদিকে পিএমএল-এন ও পিপিপির সরকার গঠনের কড়া সমালোচনা করেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআই। এই সরকারকে বিগত পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) জোট সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদ বলে উল্লেখ করেছে দলটি। এ সময় জনগণের ম্যান্ডেট চুরি করা হয়েছে বলেও দাবি করে দলটি।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাণে সর্বোচ্চ ৯২টি আসন পায় পিটিআইয় সমর্থিত স্বতন্ত্ররা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭৫টি আসন পায় পিএমএল-এন। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ ৫৪টি আসন পায় পিপিপি।