পিরোজপুরে কাউখালীতে নিত্য প্রয়োজনীয় সবজির দাম পাগলা ঘোড়ার মতো লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বাজার মনিটরিং দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম অধিক মূল্যে বাড়িয়ে বিক্রি করছে।
শুক্রবার সকাল ১০টায় কাউখালী সাপ্তাহিক হাটের দিনে দক্ষিণ বাজারে সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিটি সবজির দাম গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে আসা ক্রেতারা জানান, ‘সবজির দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের পক্ষে কিনে খাওয়া সম্ভব হবে না।‘
ভুক্তভোগী ক্রেতারা অভিযোগ করেন বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ার কারণে বিক্রেতারা ইচ্ছামতো বেশি দামে সবজিসহ সকল প্রকার নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যর দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। এক কেজি কাঁচা মরিচ ৫০০ টাকা, গাজর ২০০ টাকা, বরবটি ১৪০ টাকা, কাকরোল ১০০ টাকা, বেগুন এক কেজি ১৫০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, কচুর গাড়ি ৭০ টাকা, মুলা ৭০ টাকা, বাঁধাকপি ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৭০ টাকা, রেহা ৮০ টাকা, শসা ৯০, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, এক হালি কাঁচকলা ৫০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, পটল ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ভুক্তভোগী ক্রেতারা আরো অভিযোগ করেন ছোট সাইজের একটি লাউ ৮০ থেকে ১০০, ছোট এক মোটি লাউ শাক ৫০ টাকা, লাল শাকের আঁটি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজি বিক্রেতা বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমাদের স্থানীয় পর্যায়ে সবজির উৎপাদন কম। অতি বৃষ্টির কারণে সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।‘
সবজি বিক্রিতা রতন পাল জানান, ‘মোকামে সবজির সরবরাহ কম থাকায় দাম একটু বেশি। অতি বৃষ্টিসহ বিভিন্ন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সবজি চাষ নষ্ট হয়ে গেছে।‘
সবজি বিক্রিতা আল আমিন হোসেন জানান, ‘আশা করি, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কিছু দিনের ভেতরে বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়বে তখন দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসবে।‘
সবজি ক্রয় করতে আসা ক্রেতা ওমর ফারুক জানান, যেভাবে বাজারে দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে করে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। আমাদের পক্ষে এত দাম দিয়ে সবজি কেনা সম্ভব হচ্ছে না।
দিনমজুর আবুল হোসেন আক্ষেপ করে বলেন, ‘মাছ, গোশত ও ডিম কেনা আগে থেকেই বন্ধ করে দিয়েছে। এখন একটু সবজি দিয়ে কোনোমতে দুইটা ভাত খাই তাও মনে হয় বন্ধ হয়ে যাবে। এই দুঃখ কষ্টের কথা কারে কমু।‘
গণমাধ্যমকর্মী ও মানবাধিকারকর্মী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অবিলম্বে বাজার মনিটরিং জোরদার করতে হবে এবং সিন্ডিকেট না ভাঙতে পারলে বাজার দর সহজে নিয়ন্ত্রণে আসবে না।‘
কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল মোল্লা বলেন, ‘আমরা বাজার দর পর্যবেক্ষণ করছি। মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করছি। যে সকল ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সকল প্রকার নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যর দাম বাড়িয়ে বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।‘