ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাসভবনে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। লেবানন থেকে এ হামলা করা হয়েছে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নেতানিয়াহুর মুখপাত্র জানান, তেলআবিবের উত্তরাঞ্চলে সিজারিয়ায় নেতানিয়াহুর বাসভবনে এ হামলা হয়েছে। লেবানন থেকে তার বাসভবনে ড্রোনটি ছোড়া হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলার সময়ে নেতানিয়াহু ও তার পরিবারের কেউ বাসভবনে ছিলেন না। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এর আগে সকালে আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, শুক্রবার তারা ইসরায়েলে অন্তত ৭৫টি প্রজেক্টাইল ছুড়েছে। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর তাৎক্ষণিক জানানো হয়নি।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, লেবানন থেকে আসা দুটি ড্রোন তারা ভূপাতিত করেছে। অন্যদিকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আক্রমণের জন্য হিজবুল্লাহ লঞ্চপ্যাড হিসাবে ব্যবহৃত এলাকাগুলো থেকে রকেট এবং অন্যান্য অস্ত্র ধ্বংস করেছে।
এরপর টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, উত্তর হাইফা এলাকায় তারা রকেটেরে একটি ব্যারেজ ছুড়েছে।
একইসময়ে লেবাননের সরকারি সংবাদ সংস্থা (এনএনএ) জানিয়েছে, বিকেলের দিকে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আনকুন, মারুব এবং তারায়ায় বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
বিবিসির এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে মধ্যপ্রাচ্য। গত এক বছরে বিশ্বে অনেক বিপদের মুহূর্ত এসেছে। তবে এবারেরটি সবচেয়ে ভয়াবহ। গত কয়েক দিন আগে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন। এরপর লেবাননে স্থল হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। জবাবে ইরান ইসরায়েলে প্রায় ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে। এরপর তেহরানে পাল্টা হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে তেলআবিব।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা ও আঞ্চলিক শক্তিগুলো উত্তেজনা কমানোর জন্য চাপ দিচ্ছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ দ্রুত সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭ এর পক্ষ থেকে সব পক্ষকে ধৈর্য ধরতে বলা হয়েছে; কিন্তু এখন পর্যন্ত সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে মধ্যপ্রাচ্য সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে। গত এক সপ্তাহে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনার কারণে মূলত এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যায় লেবাননের বৈরুতে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ইসরায়েল বোমা হামলা চালায়। সেখানে ব্যাপক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। অনেক আবাসিক ভবনধসে পড়ে। মাটিতে বড় গর্ত সৃষ্টি হয়। আকাশ ধুলাবালি ও ধোঁয়ায় ভরে ওঠে। পুরো লেবানন থেকে ওই দৃশ্য দেখা যায়। এ হামলা হয় মাটির নিচে থাকা হিজবুল্লাহর বাংকার লক্ষ্য করে। এ হামলায় নিহত হন হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ। ইসরায়েলের এক সপ্তাহ ধরে চালানো হামলায় ৫০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার পর নাসরুল্লাহর মৃত্যুর খবর আসে।
তারও এক সপ্তাহ আগে এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে লক্ষ্য করে পর পর অসংখ্য ওয়াকি-টকি এবং পেজার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে কমপক্ষে ৩২ জন নিহত এবং তিন হাজার জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছিল।