২৩, ডিসেম্বর, ২০২৪, সোমবার
     

ফারুক হোসেন, রুহিয়া(ঠাকুরগাঁও) ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়া থানাধীন রাজাগাঁও ইউনিয়নের চাপাতি নামক এলাকার (সুইচগেট) টাংগন নদীতে চলছে মাছ ধরা উৎসব।  বুধবার রাতে রুহিয়া থানাধীন রাজাগাঁও ইউনিয়নের চাপাতি গ্রামের টাংগন নদী খুলে দেওয়ায় মাছ ধরতে নামে কয়েক ইউনিয়নের শত শত জেলেসহ সাধারণ মানুষ। সরেজমিনে দেখা

যায়, মাছ ধরার জন্য গ্রাম এবং শহরের শত শত মানুষ চাপাতি টাংগন নদীতে মাছ ধরতে আসেন। নারী, পুরুষ ও কিশোর সহ বৃদ্ধরাও রয়েছেন এ দলে। সবাই জাল,পলো, খোচা, লাফিজাল, ফিকাজাল নিয়ে নেমে পড়েন মাছ ধরতে। এছাড়া যাদের মাছ ধরার সরঞ্জাম নেই তারাও হাত দিয়েমাছ ধরতে নেমে পড়েন কাদা পানির মধ্যে। সব মিলিয়ে এখানে এখন চলছে মাছ ধরার ধুম,চলবে রবিবার পর্যন্ত।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায, ১৯৮২ সালে শুকনো মৌসুমে এ এলাকার জমি চাষাবাদের জন্য ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ১৪নংরাজাগাঁও ইউনিয়নে ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ড এই

টাংগন নদী নির্মাণ করেন। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পানি

আটকে রাখার ফলে এই অঞ্চলের উঁচু জমি চাষাবা

করার উপযুক্ত হয়। অপর দিকে আটকে রাখা পানিতে

প্রতিবছর শীতের শুরুতেই সুইচগেটে’র পানি ছাড়ে

দেওয়ার পর মাছ ধরার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

এভাবেই প্রতিবছর চলে (সুইচগেট) টাংগন নদীতে মাছ

ধরার উৎসব। মাছ শিকারীরা ফিকা জাল, লাফি জাল,

কারেন্ট জাল, চটকা জালসহ বিভিন্ন মাছ ধরার সরঞ্জাম

নিয়ে আসেন মাছ শিকার করতে। পঞ্চগড়ের ফুটকী

বাড়ি হতে আসা মাছ শিকারি জুয়েল রানা বলেন,

প্রতিবছর এইগেটে মাছ ধরার জন্য এ দিনটির অপেক্ষা করি। বোদা উপজেলার চন্দনবাড়ি ইউনিয়ন থেকে আসা মাছ শিকারি দুলাল ও আহাম্মদ বলেন, আমরা শুধুমাছ ধরার জন্য নয়, আমরা কয়েক জন এসেছি এই মিলন মেলায় অংশ গ্রহনের জন্য, কারন হিসেবে আমাদের ওখানে বিনোদনের কিছু নেই তাই এখানে শুধুমাছ ধরতে নয়, যেন এক মিলন মেলায় অংশ নিয়েছি।,

যেদিকে চোখযায় শুধু মানুষ আর মানুষ। ঠাকুরগাঁও  থেকে আসা মাছ শিকারি হামিদুর রহমান বলেন, সকালে মাছ ধরতে এসেছি সারাদিন মাছ ধরবো, এতে আমার অনেক ভালো লাগে। এখন পর্যন্ত ছোট-বড় সব মিলে ৫/৬ গুড়া কেজি মাছ পেয়েছি। বুধবার ভোর হতে শুরুহওয়া এ মাছ ধরা চলবে  রবিবার পর্যন্ত। এদিকে শহরের চাইতে এখানে মাছের দাম অনেক বেশি বলে জানালেন বোদা  হতে আসা মাছ ক্রেতা আব্দুল করিম। লাহিড়ি হতে মাছ কিনতে আসা সাইফুল বলেন, এখানে টেংরা, টনা, মাছ প্রতি কেজি ৫০০- ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর শোল ও রুই-কাতল মাছ চাওয়া হচ্ছে ৪’শ থেকে ৫শ’ টাকা। প্রতি কেজি পুঁটি মাছ ২৫০-৩০০ টাকা।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ঢোলারহাট হতে আসা আব্দুল মজিদ জানান, বর্ষাকালে পানি আটকে রাখার পর কার্তিক মাসের প্রথম দিকে এইগেট খুলে দেওয়া হয়। এতে উজানের পানি কমে যায়। আর শীতের শুরুতেই গেট উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় মাছ ধরার জন্য। এভাবেই প্রতিবছর চলে (সুইজ গেটে) টাংগন নদীতে শত শত মানুষের মাছ ধরার উৎসব ও হাজার হাজার মানুষের মিলন মেলা।

               

সর্বশেষ নিউজ