২৬, এপ্রিল, ২০২৪, শুক্রবার
     

তলদেশে জমেছে পলিথিনের স্তর হুমকিতে কর্ণফুলী

চট্টগ্রামের লাইফলাইনখ্যাত কর্ণফুলী নদীতে জমেছে পলিথিনের স্তর। এতে নাব্য হারাচ্ছে নদীটি। তলদেশে কয়েক মিটার পুরু পলিথিনের আস্তরণের কারণে কর্ণফুলীতে জাহাজ চলাচল এখন হুমকির মুখে। চট্টগ্রাম বন্দরের ভবিষ্যৎ নিয়েও দেখা দিয়েছে শঙ্কা। কেননা দেশের সবচেয়ে বড় সমুদ্রবন্দরের স্থাপনাগুলো নির্মিত হয়েছে কর্ণফুলী নদীকে কেন্দ্র করে।

বন্দরসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কর্ণফুলীর গভীরতা বাড়িয়ে বন্দরকে বাঁচাতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্প হাতে নেওয়া হলেও শুরু থেকে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায় পলিথিন। ড্রেজার আটকে যায় পলিথিনের পুরু স্তরে। চীন থেকে আনা অত্যাধুনিক ড্রেজার মেশিনও ফেরত পাঠাতে হয়েছে। ফলে স্বাভাবিক গতিতে নদীটি খনন করা যাচ্ছে না। অন্তত ৩০টি খাল দিয়ে কর্ণফুলীতে পড়ছে পলিথিন। এভাবে নদীর তলদেশে ২-৭ মিটার পর্যন্ত পলিথিনের স্তর জমেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুরোদমে কাজ করতে পারলে এরই মধ্যে ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্প শেষ হয়ে যেত। কিন্তু পলিথিনের কারণে স্বাভাবিক খননকাজ বাধার মুখে পড়ছে। এ কারণে কাজ করতে হচ্ছে ধীরগতিতে।

সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন বড় ধরনের ড্রেজিং না হওয়ায় এ নদীর তলদেশ পলি জমে নাব্য কমে গেছে। ফলে বড় জাহাজগুলো (মাদার ভেসেল) কর্ণফুলী নদীতে প্রবেশ করতে পারে না। বহির্নোঙরে নোঙর করা বড় জাহাজ থেকে লাইটার (অপেক্ষাকৃত ছোট আকারের) জাহাজের মাধ্যমে পণ্য খালাস করা হয়। অবশ্য কিছু জাহাজ বহির্নোঙরে পণ্য কমিয়ে হালকা করার পর কর্ণফুলী নদী হয়ে বন্দরের জেটিতে নিয়ে আসা হয়। বন্দরের কার্যক্রম সচল রাখতে দীর্ঘদিন ধরে কর্ণফুলীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের দাবি জানিয়ে আসছিলেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।

বন্দর কর্তৃপক্ষ ‘কর্ণফুলী নদীর সদরঘাট থেকে বাকলিয়া চর পর্যন্ত ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নাব্য বৃদ্ধি’ প্রকল্প হাতে নেয়। ২০১৯ সালে এর কাজ শুরু হয়। কিন্তু শেষ হয়নি এখনো।

বন্দরের তথ্যমতে, এ প্রকল্পের আওতায় খননকাজ শুরুর পরই দেখা যায় ড্রেজার মেশিন ঠিকভাবে কাজ করছে না। এর কারণ পলিথিন। বিভিন্ন খাল হয়ে পলিথিন ও অন্যান্য কঠিনবর্জ্য নদীর তলদেশে জমেছে। বারবারই পলিথিনে আটকে যাচ্ছিল ড্রেজার মেশিন। বিভিন্ন স্থানে ২-৭ মিটার পর্যন্ত পলিথিনের স্তর পাওয়া গেছে। এমন পরিস্থিতিতে চীন থেকে আনা হয় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ৩১ ইঞ্চি ব্যাসের একটি সাকশন ড্রেজার। আশা করা হয়েছিল এই ড্রেজার যুক্ত হলে গতি আসবে খননকাজে। কিন্তু ছোট আকারের ড্রেজারের মতো এটিও পলিথিনের স্তর খনন করতে ব্যর্থ হয়। এতে বিপাকে পড়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এমন পরিস্থিতিতে চীন থেকে আনা ড্রেজার ফেরত পাঠানো হয়। প্রকল্প আংশিক সংশোধন করা হয়। এখন দেশীয় পদ্ধতিতে ছোট আকারের ড্রেজিং মেশিন দিয়ে বালু তুলে তা আবার বার্জে করে নিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে রাখা হচ্ছে। এভাবেই ধীরগতিতে চলছে খননকাজ।

               

সর্বশেষ নিউজ