সাইফুল ইসলাম রুদ্র, নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা নির্বাচন অফিসে ঘুষবাণিজ্য এখন ওপেন-সিক্রেট হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভোটার তালিকায় নাম উঠানো, সংশোধন ও স্থান পরিবর্তনসহ সব কাজে ঘুষ না দিলে কাজ হয় না। এতে ভোগান্তিতে এ উপজেলার হাজারও সেবাপ্রার্থী। ভুক্তভোগীরা বিষয়টিকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বিভিন্ন সেবাপ্রার্থীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রায়পুরা নির্বাচন অফিসে অস্থায়ী কর্মরত মেহেদী সাধারণ জনগনকে অনেক ভোগাচ্ছে। প্রতি ভোটার আইডি কার্ডের জন্য সে ১০ – ১২ হাজার টাকা নেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে যা আগামী ধারাবাহিক পর্বে তুলে ধরা হবে। আরো স্লিপ দিয়ে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য তুলতে নাকি ১১৫ টাকা থাকলেও সে নিচ্ছে ২৩০ টাকা, ভোটার স্থানান্তরে সরকারি কোনো ফি না থাকলেও নিচ্ছেন ২৩০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। আর এনআইডি কার্ডে কোনো প্রকার ভুল সংশোধন করতে হলে ৭ -৮ হাজার টাকা দিতে হয়।
তবে অনলাইন কপি আনতে গেলে সেই অফিস সহকারী ২৩০ টাকা নিয়ে আবার শিখিয়ে দিচ্ছেন কেউ জানতে চাইলে বলবেন ১৪০ টাকা নিয়েছে। এভাবে উপজেলার সেবাপ্রার্থীরা এ হয়রানির স্বীকার হচ্ছে। তবে অনলাইন কপি সংগ্রহ করতে গেলে যে খানে ব্যাংক স্লিøপ নিয়ে যাওয়ার কথা সেখানে নগদ টাকায় করিয়ে দেন এই অস্থায়ী কর্মকর্তা মেহেদী। এতে সরকার অনেক রাজস্ব হারাচ্ছে বলে জানান সামাজিক ব্যক্তিরা।
এদিকে রায়পুরা উপজেলা নির্বাচন অফিসে বিগত সময়ে অস্থায়ী কর্মচারী সোহেল অনেক মানুষের সাথে জাতীয় পরিচয় পত্র করিয়ে দিবে বলে অনেক হাতিয়ে নিয়েছে। বর্তমানে সে বেলাব উপজেলাতে থেকে তার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে রায়পুরা উপজেলা নির্বাচন অফিসে তার অবৈধ ঘুষ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে রায়পুরা উপজেলা নির্বাচন অফিসে সংবাদ কর্মী সাইফুল ইসলাম রুদ্র অনিয়মের বিষয়ে খবর পেয়ে বিস্তারিত জানতে গেলে, ভুক্তভোগী মোঃ মোস্তফা মিয়া বলেন আমার বাড়ী বোয়ালমারা তুলাতলী এলাকায়। আমি এসেছিলাম নতুন ভোটার হতে। কিন্তু আমার সমস্ত কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও এমনকি ডাটা এন্ট্রি অপারের স্বাক্ষর থাকলেও আমার কাগজপত্র ত্রুটি দেখিয়ে ফেরত দিয়ে দেয়। অথচ মেহেদীকে ১০ – ১৫ হাজার টাকা দিয়ে অনেকে ফিঙ্গার করিয়ে নিচ্ছে। অথচ ৮ হাজার টাকা দিয়েও আজকে আমি ফিঙ্গার করতে পারি নাই। কিন্তু মেহেদীর হাতে আজকে আমি প্রায় ১৫ – ২০ টি ফাইল নিজে দেখেছি এবং সবগুলো ফাইল প্রায় ১০- ১২ হাজার টাকার বিনিময়ে ফিঙ্গার করিয়ে দিবে বলে চুক্তি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে, রায়পুরার সাধারণ জনগণ এই নির্বাচন অফিসে এসে প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অনেক মানুষ কান্নাকাটি করে সংবাদ কর্মী রুদ্রর নিকট বক্তব্য দিয়েছেন এই অফিসের দুর্নীতির বিষয়ে যা আগামী কয়েকটি ধাপে তুলে ধরা হবে।
এ অভিযোগের বিষয়ে সংবাদকর্মী জানতে চাইলে, তিনি ব্যস্ত দেখিয়ে এড়িয়ে যান। অথচ খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তার বদলী হয়েছে পলাশ উপজেলায়। কিন্তু আজ পহেলা আগস্টেও সে রায়পুরা নির্বাচন অফিসে কর্মরত অবস্থায় আছে।
এ বিষয়ে নরসিংদী জেলার জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ রবিউল আলম এর নিকট মোবাইল ফোনে সংবাদকর্মী সাইফুল ইসলাম রুদ্র জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেহেদীকে পলাশ উপজেলায় পোস্টিং করা হয়েছে। সে কীভাবে এখনও রায়পুরা উপজেলাতে কাজ করতেছে এটি আমরা তদন্ত করে দেখব এবং ঘটনার সত্যতা মিললে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।