১৮, নভেম্বর, ২০২৪, সোমবার
     

সিরাজদিখানে বক্স কালভার্ট সেতু নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ, অনিয়ম না হওয়ার নিশ্চয়তা প্রকৌশলীর!

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের তালতলা বাজার সেতুর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নির্মাণ কাজে নিম্ন মানের পাথর ও বালু ব্যবহারসহ প্রয়োজনের তুলনায় সিমেন্ট কম ব্যবহার একাধিক অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের তালতলা বাজার সংলগ্ন খালের উপর ১৪ মিটার আর.সি.সি বক্স কালভার্ট সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে।

“প্রোগ্রাম ফর সার্পোটিং রুরাল ব্রিজেস” প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ সরকার বিশ্বব্যাংক, আইডিএ’র অর্থায়নে বক্স কালভার্ট সেতুটি নির্মাণের জন্য ১ কোটি ২৮ লাখ ৫৩ হাজার ৯ শত ১১ টাকা বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার (এলজিইডি) প্রকৌশল অধিদপ্তর। সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার দায়িত্ব পায় মেসার্স খাজা চিশতীয়া এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। সেতুটির কাজ শুরু করার পর থেকে তালতলা বাজার ব্যবসায়ী ও স্থানীয় লোকজন নির্মাণ কাজে নিম্ন মানের পাথর ও নিম্ন মানের বালু ব্যবহারসহ প্রয়োজনের তুলনায় সিমেন্ট কম ব্যবহারের অভিযোগ করে আসছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে নিম্ন মানের পাথর ও নিম্ন মানের বালু ব্যবহারের সত্যতা পাওয়া যায়। বর্তমানে সেতুটির প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

সপ্তাহ খানেক আগে সেতুর মাঝ বরাবর একমাত্র পিলার ঢালাই করা হয়েছে। ঢালাই সাপোর্ট খোলার পর ঢালাইকৃত পিলারে নির্মাণ সামগ্রী প্রয়োজনের তুলনায় কম এবং সঠিক মাত্রা প্রয়োগ না করায় বিভিন্ন অংশে খানাখন্দের চিত্র ফুটে উঠেছে। সেসব স্থানে আলাদা ভাবে সিমেন্ট ও বালুর সংমিশ্রণে প্লাস্টার করে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে। এসময় সেতু নির্মাণের দায়ীত্বে থাকা (সাব কন্ট্রাক্টর) দলু মিয়ার কাছে নিম্ন মানের পাথর বালু ও সিমেন্ট কম ব্যবহারের ব্যপারে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, ভাই জিনিস পত্রের দাম আগের চেয়ে দ্বিগুন। একটু আধটু যদি মিক্স না করি তাহলে লাভ হবে কিভাবে! আপনি এ ব্যপারে আবুল কালাম কানন (মেইন কম) ভাইয়ের সাথে কথা বলেন এ বলে তিনি সাংবাদিকদের চায়ের নিমন্ত্রণ করেন।

স্থানীয় ও বাজার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সেতু নির্মাণে এক নম্বর পাথর ও বালু ব্যবহার করার কথা থাকলেও এক নম্বর পাথরের সাথে নিম্ন মানের পাথর মিশিয়ে ব্যবহারের পাশাপাশি নির্মাণ কাজে নিম্ন মানের বালুর ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া সেতুর স্ট্রাকচার মজবুত করণের প্রধান নির্মাণ সামগ্রী সিমেন্ট প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই কম ব্যবহার করা হয়েছে। এতে করে সেতুটি নির্দিষ্ট মেয়াদকাল পর্যন্ত স্থায়ীত্ব নিয়ে প্রশ্ন দৎশসণতুলেছেন স্থানীয়রা। এদিকে নির্মাণ কাজে অনিয়মের বিষয়টি এলডিইডি প্রকৌশলী রেজাউল ইসলামকে অবগত করা হলে তিনি সরাসরি কাজে অনিয়ম না হওয়ার নিশ্চয়তা দেন। কাজের গুনগত মান যাচাই না করে অনিয়ম না হওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়ায় সাংবাদিকদের মধ্যে নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স খাজা চিশতীয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আবুল কালাম কানন বলেন, ব্রিজের কাজে কোন অনিয়ম করা যায় না! আমরা কোন অনিয়ম করি নাই। কাজে অনিয়নের কোন সুযোগ নেই।

উপজেলা (এলজিইডি) প্রকৌশলী রেজাউল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, ব্রীজে কোন অনিয়ম হয় নাই! যদি অনিয়ম হয় তাহলে আমরা কাজ বন্ধ করে দিবো।

               

সর্বশেষ নিউজ