মোহন মোড়ল,শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি: শ্রীনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রুসদী উচ্চ বিদ্যালয়ের পূণাঙ্গ ম্যানেজিং কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে একটি সিন্ডিকেট মহল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে অভিযোগ দায়ের করেন। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার তন্তর ইউনিয়নের রুসদী গ্রামে অবস্থিত রুসদী উচ্চ বিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় উপ-পরিদর্শক আব্দুর রহমান ও সহকারী মো. পারভেছ তদন্তের জন্য আসেন।
ক্লাস চলাকালীন সময়ে অভিযোকারী আব্দুল কুদ্দুস ও শহিদুল ইসলাম মোল্লার নেতৃত্বে সহযোগী আওয়ামী লীগ নেতা হারুন অর রশিদ মোল্লা নামে এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় স্টিকার লাগিয়ে জিপগাড়ি (ঢাকা মেট্রো ঘ-০২ ৩০১৭) নিয়ে প্রায় শতাধিক মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে হর্ন বাজাতে বাজাতে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন। এতে রুসদী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা আতঙ্কে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। মুহুর্তের মধ্যে ওই বিদ্যালয়ের পাশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা চিৎকার শুরু করলে বিদ্যালয়ের কেচি গেইট লাগিয়ে দিতে দেখা যায়। তার কিছুক্ষণ পরে শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তোফাজ্জল হোসেনকে বেশকিছু নেতাকর্মীকে নিয়ে শ্লোগান দিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন।
পরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে শিক্ষা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুল রহমানকে বলতে দেখা যায় অভিযোগ দায়েরকারীগণ ও বিদ্যালয়ের নির্বাচিত অভিভাবক সদস্যগণ ছাড়া সবাইকে চলে যাওয়ার অনুরোধ করেন। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন সবাই নিয়ে সরে আসেন। লক্ষ্য করা যায়, শিক্ষা বোর্ডের তদন্ত চলাকালীন সময়ে বহিরাগতরা বিদ্যালয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি করলে শ্রীনগর থানার এসআই প্রভাষ ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিক্ষা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা তদন্ত কাজ করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড (ঢাকা) বিদ্যালয় উপ পরির্দশক আব্দুর রহমান জানান, খুব শীঘ্রই তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে। এলাকাবাসী জানায়, এর আগে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনে অনুষ্ঠিত নির্বাচন বানচালের জন্য অতি উৎসাহি একটি মহল নানা ভাবে ষড়যন্ত্র ও এলাকায় ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এখন মহলটি দলীয় প্রভাব বিস্তার করে সভাপতির পদ নিয়ে ঝামেলার সৃষ্টি করছে। বিদ্যালয়ের লেখা পড়ার মান উন্নয়নে তাদের কোন খেয়াল নেই। অথচ বিগত সময়ে তারা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিতে থেকে অনিয়ম ও দলাদলী করে বিদ্যালয়ের সার্বিক ক্ষতিসাধন করেছে। এ সময় বিদ্যালয়টির দাতা সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক শিক্ষক আব্দুল বারেক শেখ দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আজকে শোডাউন করায় ছাত্র-ছাত্রীরা ভয় পেয়েছে। আমি এর প্রতিবাদ করেছি।
উল্লেখ্য, গত ২৩ জুলাই রুসদী উচ্চ বিদ্যালয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বিজয়ী অভিভাবক সদস্য আব্দুল মঈম কমলের প্রস্তাবনায় ও দাতা সদস্য আব্দুল কুদ্দুসসহ সকল সদস্যর সম্মতিক্রমে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে ৪ বারের সাবেক সভাপতি মো. আওলাদ হোসেনের নাম নির্বাচিত করা হয়। অথচ নির্বাচিত দাতা সদস্য আব্দুল কুদ্দুস ও ভোটে পরিজিত অভিভাবক সদস্যরা আওয়ামী লীগ নেতা হারুন অর রশিদ, শহিদুল ইসলাম মোল্লা, মিজানুর রহমান লন্ঠুসহ একটি মহল বিদ্যালয়ের পূণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন না হওয়ার লক্ষ্যে উপজেলা, জেলা ও শিক্ষা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন।