১৭, মে, ২০২৪, শুক্রবার
     

নির্বাচন নিয়ে জাকের পার্টির চেয়ারম্যানের নতুন ফর্মুলা

জাকের পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা আমীর ফয়সল নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রশ্নে অব্যাহত বিতর্ক নিরসনে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা তুলে ধরে বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে বিতর্ক চলতেই থাকবে। তাই এ অবস্থার উত্তরণে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনতে হবে।

প্রযুক্তির যুগে প্রযুক্তির প্রয়োগ করে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া ও ফলাফল বিতর্কমুক্ত রাখতে হবে। এ লক্ষ্যে ভোটগ্রহণে ব্লক চেইন পদ্ধতির প্রয়োগ ঘটাতে হবে। একইসাথে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ নিজ দলের সদস্য ও তালিকাভুক্ত ভোটারদের আইডি কার্ড, ছবি ও স্বাক্ষরসহ তালিকা নির্বাচন কমিশনে জমা দান করতে হবে, নির্বাচন কমিশন তা ডাটাবেজ তৈরি করে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেবে এবং নির্বাচনী ব্যয় সীমার বাধ্যবাধকতা তুলে দিতে হবে।

সোমাবার বিকালে সিলেট আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে আয়োজিত সিলেট বিভাগীয় জাকের পার্টির ইসলামী সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন জাকের পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ড. সায়েম আমীর ফয়সল।

জাকের পার্টির সিলেট বিভাগীয় সভাপতি আবুল খায়ের বাবুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তৃতা করেন জাকের পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব শামীম হায়দার।

মোস্তফা আমীর ফয়সাল বলেন, ব্লকচেইন পদ্ধতিতে ভোটদান প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হবে না। ব্লকচেইন মূলত অর্থ লেনদেনের টেকনোলজি। এতে সমস্ত তথ্য উপাত্ত সুরক্ষিত থাকে। কোনো গরমিল সম্ভব নয়। ব্লকচেইন একমাত্র টেকনোলজি, যা হ্যাক করা যায় না কোনোভাবেই।

তিনি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সদস্য এবং ভোটারদের ডাটাবেজ তৈরি প্রসঙ্গে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি নিজ নিজ দলের সদস্য ও ভোটারদের স্বাক্ষরযুক্ত তালিকার ডাটাবেজ তৈরি করে তা নির্বাচন কমিশনে জমা দেয় এবং এবং নির্বাচন কমিশন এ ডাটাবেজ মোবাইল অ্যাপ তৈরির মাধ্যমে তা সর্বস্তরের জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়, তাহলে রাজনৈতিক দলের ভোট সংখ্যা নিয়ে আগাম ধারণা তৈরি হয়ে যাবে। ভোটদানের পর ফলাফল নিয়ে বিতর্ক থাকবে না।

জাকের পার্টির চেয়ারম্যান নির্বাচনী ব্যয় সীমার বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, গোপনে সবাই বিপুল অঙ্কের টাকা নির্বাচনে ব্যয় করেন। ফলাফলকে প্রভাবিত করেন।

মোস্তফা আমীর ফয়সল বলেন, জাকের পার্টি টাকা দিয়ে ভোট আকর্ষণকে সমর্থন করে না। ‘৭৩-এর আগে এমন ছিল না। মহান স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হয়ে তৎকালীন সরকারদলীয় প্রার্থী ওয়াহিদুজ্জামানকে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেছিলেন। কোটি কোটি টাকা খরচ করেও ওয়াহিদুজ্জামান বঙ্গবন্ধুর সাথে পেরে উঠেননি। বঙ্গবন্ধু প্রেম প্রীতি ভালোবাসা দিয়ে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। ফলে টাকা ও পেশিশক্তি প্রেম-প্রীতি ও ভালোবাসার কাছে পরাভূত হয়েছিল। সে ধারা আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। যদি সে ধারা ফিরিয়ে আনা না যায়, তাহলে কখনই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে না।

জাকের পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, বঙ্গবন্ধু জাতির স্থপতি। যে দিক দর্শন তিনি দিয়ে গেছেন, তার পথ ধরে দেশ এগিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় এরশাদ সাহেবের সময়ে উন্নয়নের কাজ হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি উন্নয়নের কাজ হয়েছে জাকের পার্টির ত্যাগে গঠিত মহাজোট সরকারের সময়। এখন সে উন্নয়ন প্রক্রিয়া ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।

মোস্তফা আমীর ফয়সল সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেন, কোন ধরনের হঠকারিতা, ক্ষমতা লাভের অতিমাত্রায় লিপ্সা যেন সীমালংঘন করে দেশে ঝগড়া-বিবাদ অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে না পারে, সেদিকে নজর রাখছি। ষড়যন্ত্রকারীরা যেন বাংলাদেশকে আবার রক্তাক্ত প্রান্তরে পরিণত করতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

জাকের পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের ব্যাপারে জাকের পার্টি কখনো আপস করে নাই। করবেও না। দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র হয়েছে বেশ কয়েকবার। সেই সময় জাকের পার্টিই রুখে দাঁড়িয়েছিল। তিনি বলেন, আমরা চাই জাতি ঐক্যবদ্ধ থাকুক। শান্তি-শৃঙ্খলা ভ্রাতৃত্ব, প্রেম-প্রীতি ভালোবাসা ফিরে আসুক।

মোস্তফা আমীর ফয়সল বলেন, মানুষকে আঘাত করে, হিংসা হানাহানি ঘটিয়ে, রক্তপাত করে, চুরি করে জাকের পার্টি বিজয়ের বন্দরে যাবে না। জাকের পার্টি ধৈর্যধারী দল। জাকের পার্টির ঐক্য ধ্বংস করতে বহু চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু সফল হয়নি। জাকের পার্টি বিনা রক্তপাতে, শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিজয়ের বন্দরে পৌঁছবে ইনশাআল্লাহ।

জাকের পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ড. সায়েম আমীর ফয়সল বলেন, একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক মজবুত অর্থনীতির বাংলাদেশ গঠনে জাকের পার্টির সব নেতাকর্মীকে এগিয়ে আসতে হবে। বাঙালি জাতির উন্নয়ন, জাতীয়তাবাদী চেতনা এবং ইসলামের পরিপূর্ণতা- মহান এ লক্ষ্য নিয়ে জাকের পার্টি কাজ করছে।

ড. সায়েম আমীর ফয়সল বলেন, জাকের পার্টির সকল সদস্য আদর্শ ও নীতি নিয়ে চলে। আমরা জ্বালাও-পোড়াওয়ের সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করি না। আমরা কাউকে কোণঠাসা করার জন্য মিথ্যা অপবাদ দেই না। তিনি হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, এখন বাংলাদেশে যে বৈষম্য দেখি তা কল্যাণকর নয়। একটি শ্রেণির কাছে আসমানছোঁয়া সম্পদ। বিপুল জনগোষ্ঠী এর ধারে কাছেও নেই।

               

সর্বশেষ নিউজ