১৯, মে, ২০২৪, রোববার
     

যুদ্ধসহায়তায় শহরে শহরে চাঁদা তুলছে নাগরিকরা

শুধু সরকার নয়, দেশ বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন ইউক্রেনীয় নাগরিকরাও। রুশ বাহিনীর আক্রমণ ঠেকাতে প্রথমেই প্রয়োজন সামরিক বাহিনীর সময়োপযোগী রসদ। সেসব সরঞ্জাম জোগানো সহজ করতে সরকারের জন্য চাঁদা তুলছেন দেশপ্রেমিক ইউক্রেনীয়রা। সুপারমার্কেট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে শহরের বিভিন্ন স্থানে হাতে হাতে ঘুরছে যুদ্ধসহায়তার চাঁদার বাক্স। স্বেচ্ছাসেবী দেশপ্রেমিকদের শ্রমে দিনরাত সচল থাকা বাক্সগুলোকে চাঁদা দিয়ে ভরে দিচ্ছেন হাজার হাজার নাগরিক। নগদ অর্থ দিয়ে আধুনিক যুদ্ধসরঞ্জাম কিনে তুলে দিচ্ছেন সামরিক বাহিনীর হাতে। এপি।

ইউক্রেনের প্রতিটি শহরেই এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে এই নগদ সহায়তা তহবিলের বাক্স। বিপুল উৎসাহ নিয়ে বাক্সে অর্থ জমা দিচ্ছেন নাগরিকরাও। খারকিভ শহরের ৪৫ বছর বয়স্ক নাগরিক তেতিয়ানা বেডনিয়াক একটি বিজ্ঞাপন সংস্থার মালিক। রাশিয়ার মতো বিশ্বের দ্বিতীয় শক্তিশালী সামরিক শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে ইউক্রেন সেনাদের। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সাহস জোগাতে বদ্ধপরিকর বেডনিয়াক। তিনি বলেন, ‘শুধু মনোবল জোগালেই হবে না, তাদের যুদ্ধের জন্য আধুনিক সরঞ্জামের প্রয়োজন।’

সুপারমার্কেটের একটি দোকানের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘এখানে অনেক সরঞ্জাম আছে, যেগুলো রাষ্ট্রের চেয়ে দ্রুত কিনতে পারে বেসামরিক লোকজন।’ খারকিভ শহরের একজন বিশিষ্ট স্বেচ্ছাসেবক তহবিল সংগ্রহকারী ইউরি মোসকালেনকো অনুমান করেছেন, তহবিল সংগ্রহের পরিমাণ নিয়ে সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। কারণ, এগুলো স্থানীয়ভাবে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে সংগ্রহ করা হয়। তবে গত বছর জাতীয়ভাবে প্রায় ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অনুদান সংগ্রহ করা হয়েছিল বলে জানান ইউরি।

রাশিয়ান সীমান্ত থেকে মাত্র ২৫ মাইল দূরে পূর্ব ইউক্রেনের শহর খারকিভের দোকানের পার্কিং লটে দাঁড়িয়েছিলেন বেডনিয়াক । তার সঙ্গে থাকা একটি ভ্যানের ভেতর জেনারেটর, চেইনস এবং অন্যান্য যুদ্ধসামগ্রীতে ঠাসা। একটু পরই ইউনিফর্ম পরা সৈন্যরা দ্রুত ভ্যানটি নিয়ে চলে যান। আর তার বন্ধুরা প্রতি মাসে ১০ হাজার মার্কিন ডলারের অনুদান সংগ্রহ করে ড্রোন, সোলার প্যানেল ও অন্যান্য সরঞ্জাম কিনেছিলেন। শুধু নগদ টাকা আর অস্ত্র কিনে দিয়েই ক্ষান্ত থাকছে না ইউক্রেনের নাগরিকরা। পারিবারিক বিভিন্ন সরঞ্জাম ক্রয়ের মাত্রা এবং গতিও বাড়িয়ে দিয়েছেন। এর অর্থ সামগ্রী মজুত নয়, সরকারি ব্যয়ের জন্য আরও অর্থ জোগান দেওয়া। বেডনিয়াক যুক্তি দিয়ে বলেন, ‘আমাদের কর দিয়েই তো বিভিন্ন খাতে অর্থ বরাদ্দ করে সরকার। আর এই সময়টায় সরকারকে এ ধরনের সহযোগিতা করা জরুরি। আর এ কারণেই দলমত আর বিভিন্ন শ্রেনি-পেশার বিভেদ ভুলে আমরা এখন দেশমাতৃকাকে বাঁচাতে সচেষ্ট।’

               

সর্বশেষ নিউজ