১৯, মে, ২০২৪, রোববার
     

এবার ক্রিমিয়া থেকেও সেনা ফিরিয়ে নিচ্ছে রাশিয়া

মহড়া শেষে ইউক্রেন সীমান্ত থেকে কিছু সেনা ফিরিয়ে নেওয়ার একদিন পর ক্রিমিয়া থেকেও সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে রাশিয়া। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

বুধবার এক বিবৃতিতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, ‘সামরিক বাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলীয় শাখা (ক্রিমিয়ায়) তাদের সামরিক মহড়া শেষ করায় ওই শাখার সব সেনাসদস্যকে নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়—মহড়ায় ব্যবহৃত ট্যাংক, সামরিক যানবাহন ও গোলাবারুদ ক্রিমিয়া থেকে রেলপথে নিয়ে আসা হবে। রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের ভিডিও ফুটেজেও দেখানো হয়েছে রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়ার সংযোগ সেতু দিয়ে রুশ সেনাদের ফিরে আসার দৃশ্য।

সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অঙ্গরাজ্য ও রাশিয়ার প্রতিবেশীরাষ্ট্র ইউক্রেন কয়েক বছর আগে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করার পর থেকেই উত্তেজনা শুরু হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করার পর আরও বেড়েছে এই উত্তেজনা।

গত দুই মাস ধরে রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তে ১ লাখেরও বেশি সেনা মোতায়েন রেখেছে রাশিয়া। পাশাপাশি, সম্প্রতি সেনা উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে ক্রিমিয়া ও রাশিয়ার অন্যতম মিত্ররাষ্ট্র বেলারুশেও। এএফপির তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক দিন ধরে ক্রিমিয়ার বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটিতে ৩০ হাজার বাড়তি রুশ সেনা অবস্থান করছিলেন।

এর মধ্যে মঙ্গলবার ইউক্রেন সীমান্ত থেকে কিছু সৈন্যদলকে ফিরিয়ে নিয়েছে রাশিয়া। তার একদিন পর ক্রিমিয়া থেকেও সেনা প্রত্যাহার শুরু করল দেশটি।

ইউক্রেন যেন ন্যাটোর সদস্যপদ লাভের আবেদন ফিরিয়ে নেয়, মূলত সেজন্য দেশটির ওপর চাপ সৃষ্টির করতেই সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছিল রাশিয়া। কারণ, ১৯৪৯ সালে গঠিত ন্যাটোকে রাশিয়া বরাবরই পাশ্চাত্য শক্তিসমূহের আধিপত্য বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে মনে করে; এবং ঐতিহাসিকভাবেই বিশ্বের বৃহত্তম দেশ রাশিয়া পাশ্চাত্য আধিপিত্যবাদের বিরোধী।

কিন্তু এই সেনা মোতায়েন ঘিরে রাশিয়ার সঙ্গে ব্যাপক উত্তেজনা শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্র ও তার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যরাষ্ট্রসমূহের মধ্যে। এক পক্ষের সেনা মোতায়েন ও অপর পক্ষের উত্তেজনায় রীতিমতো যুদ্ধাবস্থা দেখা দেয়, যা এখনও চলছে।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার বলেছেন যে, তার দেশ ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চায় না; কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সদস্যরাষ্ট্রসমূহ পুতিনের এই আশ্বাসে একেবারেই আস্থা রাখতে পারছেন না।

মঙ্গলবার এক ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, যে কোনো সময় ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরু হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা এখনও রয়ে গেছে।

ন্যাটোর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরাষ্ট্র যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস মঙ্গলবার দেশটির বেতার সংবাদমাধ্যম এলবিসি রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ সম্পর্কে বলেন, ‘রাশিয়া যদিও বলেছে যে ইউক্রেনে তার আগ্রাসনের কোনো পরিকল্পনা নেই, তবে আমরা চাই সীমান্ত থেকে যেন সব রুশ সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।’

               

সর্বশেষ নিউজ