শফিকুল ইসলাম সুমন, মানিকগঞ্জ : ৬ সেপ্টেমরব মানিকগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল আজিজের (৭০) উপর সন্ত্রাসী হামলায় তাঁর বাম চোখ অপারেশনের মাধ্যমে অপসারণ করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। বাকিটা জীবন অঙ্গ হানী নিয়েই কাটাতে হবে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজকে। এঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। দ্রুত সময়ের ভিতর সর্বচ্চ শাস্তি দাবী করেছেন নেটিজেনরা।
বীর মুক্তিযোদ্ধার ওপর এমন অমানবিক হামলায় গতকাল (৫ সেপ্টেম্বর) অভিয্ক্তু সন্ত্রাসীকে গ্রেফতারের দাবী জানান তার (আব্দুল আজিজ) সাবেক কর্মস্থল মানিকগঞ্জ পৌরসভার কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রার্থরায় প্রিতমকে (২৫) ঘটনার দুদিন পর আজ সকালে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪। গ্রেফতারকৃত প্রিতমের সর্বচ্চ শাস্তির দাবী করে মানববন্ধন করেছেন মানিকগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দরা।
র্যাব এবং স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, গেল রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) মানিকগঞ্জ শহরের গঙ্গাধরপট্টি এলাকায় আব্দুল আজিজ সকাল আটটার দিকে হাঁটার জন্য বাসা থেকে বের হন। পথিমধ্যে এলাকার জীবন মিস্ত্রির বাড়ি পর্যন্ত আসলে পেছন থেকে একটি দ্রুত গতির মোটর সাইলেক তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়।
উঠে দাঁড়িয়ে চালককে ধাক্কা দেওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে মোটর সাইকেল চালক প্রিতম ক্ষিপ্ত হয়ে আব্দুল আজিজকে অশ্লীল ভাষায় গালি গালাজ এবং হুমকি-ধামকি দিতে থাকে। বাকবিতন্ডার একসময় চালক প্রিতম অতি মাত্রায় ক্ষিপ্ত হয়ে এলোপাথারি কিল ঘুষি এবং পাশে থাকা একটি লোহাড় রড দিয়ে মাথায় এবং চোখে আঘাত করে। মাথা এবং চোখে রক্তক্ষরণ হয়ে মাটিতে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকে। পরে স্থানীয়রা স্বজনদের খবর দিলে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রথমিক চিকিৎসা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, আসামী প্রার্থ রায় প্রিতম বাবা-মায়ের অবাধ্য সন্তান। সে উশৃঙ্খল এবং নেশাগ্রস্থ। সে মানিকগঞ্জ সরকারিদেবেন্দ্র কলেজের ডিগ্রি ২য় বর্ষের ছাত্র। ঘটনার দিন রাতে মানিকগঞ্জ সদর থানায় প্রিতমের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টা মামলা করেছেন আব্দুল আজিজের শ্যালক আমিনুল ইসলাম। এই মামলার প্রেক্ষিতে র্যাব তথ্য-প্রযুক্তি এবং গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলার ঘিওর উপজেলার কুন্দরিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী হত্যাচেষ্টার বিষয়টি স্বীকারকরে বলে জানিয়েছেন র্যাব।
গ্রেফতারের পর সকাল এগারটায় মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন করেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা ফোরাম। এসম বক্তরাবলেন, মুক্তিযোদ্ধারা দেশের বীর সন্তান। সময়ের সাথে সাথে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যকমে আসছে। আমরা যারা আছি এই ঘটনা আমাদের কাছে কলঙ্কের। এই ঘটনার সঠিক বিচার দেখে যেতেনা পারলে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে পরিচয় দিতে লয্যা বোধ হবে। দ্রুত সময়ের ভিতর এই ঘটনারসাথে জরিতকে সর্বচ্চ শাস্তি দাবী করেন বক্তরা।
উল্লেখ্য, আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ মানিকগঞ্জ পৌরসভার সাবেক সচিব ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সহকারী কমান্ডার।