তাইওয়ান স্বাধীনতার যেকোনো চেষ্টা চালালে চীন ‘যুদ্ধ করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করবে না’ এবং ‘টুকরা টুকরা করে ফেলব।’ শুক্রবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর লয়েড অস্টিনের সাথে প্রথম মুখোমুখি বৈঠকেই এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়ে ফেঙ্গি।
ওয়ে এ সময় বলেন, ‘কেউ যদি তাইওয়ানকে চীন থেকে আলাদা করার সাহস করে, তবে মূল্য যাই হোক না কেন, চীনা সেনাবাহিনী যুদ্ধ শুরু করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করবে না।’
তিনি বলেন, ‘পিএলএর সামনে যুদ্ধ করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প থাকবে না… এবং তাইওয়ানের স্বাধীনতার যেকোনো চেষ্টা গুঁড়িয়ে দেবে, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডগত অখণ্ডতা রক্ষা করবে।’
অবশ্য লড়াইয়ের কথাবার্তা হলেও ওয়ে বলেন, অস্টিনের সাথে তার বৈঠকটি ‘সাবলীলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।’
সিঙ্গাপুরে সাঙগ্রি-লা ডায়ালগ সিকিউরিটি সামিটের ফাঁকে প্রায় এক ঘণ্টার এই বৈঠক হয়। বৈঠকের জন্য আধা ঘণ্টা সময় নির্ধারণ করা হলেও তা দ্বিগুণ সময় ধরে চলে।
চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, বৈঠকে চীনা মন্ত্রী আরো প্রতিজ্ঞা করেন যে ‘তাইওয়ান স্বাধীনতার ব্যাপারে যেকোনো ধরনের ষড়যন্ত্র করলে তাকে টুকরা টুকরা করে দেয়া হবে, মাতৃভূমির সাথে ঐক্যবদ্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ’ করবে’ বেইজিং।
তিনি বলেন, ‘তাইওয়ান হলো চীনের তাইওয়ান… চীনকে সংযত করার জন্য তাইওয়ানকে ব্যবহার কখনোই কাজে লাগবে না।’
স্বশাসিত, গণতান্ত্রিক দ্বীপ তাইওয়ান সার্বক্ষণিক চীনা হুমকির মুখে রয়েছে। চীন সবসময় বলে আসছে যে এটি তাদের ভূখণ্ড। তারা কোনো একদিন এটি দখল করার কথাও বলে থাকে।
পেন্টাগন জানিয়েছে, চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে অস্টিন বলেছেন যে ‘তাইওয়ানের প্রতি আরো অস্থিতিশীলতামূলক পদক্ষেপ থেকে সংযত’ থাকতে হবে বেইজিংকে।
পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে এক মার্কিন কর্মকর্তঅ বলেন, বৈঠকের বেশির ভাগ সময়জুড়ে তাইওয়ান নিয়েই আলোচনা হয়। অস্ট্রিন আবারো বলেন, তাইওয়ানের ব্যাপারে ওয়াশিংটনের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন হয়নি। তিনি চীনা ‘সামরিক আগ্রাসনের’ সমালোচনা করেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন দায়িত্ব গ্রহণের পর এই প্রথম অস্টিন ও ওয়ে মুখোমুখি মিলিত হলেন।
তাইওয়ানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সমর্থক ও অস্ত্র সরবরাহকারী হলো যুক্তরাষ্ট্র। সর্বশেষ অস্ত্র চুক্তি অনুযায়ী বুধবার তাইওয়ানি নৌবাহিনীকে প্রায় ১২০ মিলিয়ন ডলারের খুচরা যন্ত্রণাংশ দিতে রাজি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বৈঠকের সময় ওয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বলেন, এই বিক্রি ‘চীনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা স্বার্থকে মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন’ করবে।
গত দুই বছর ধরে তাইওয়ানের কাছে চীন তার সামরিক তৎপরতা বাড়িয়েছে।
সূত্র : আলজাজিরা