বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘বিদ্যুৎ নিয়ে কয়েক মাস আগে অনেক মাতামাতি শুনলেও আসলে তা ছিল ফাঁকা বুলি। তাই এই সরকারের উন্নতি ঘরে ঘরে মোমবাতি। জনগণের হাতে এ সরকার হারিকেন ধরিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ যায় না, মাঝে মাঝে দেখা করতে আসে। বিদ্যুৎ এসে বলে, এখনো বেঁচে আছি, মরিনি।’
বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন। স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রয়াত সাবেক সভাপতি শফিউল বারী বাবুর স্মরণে এ সভার আয়োজন করা হয়।
গয়েশ্বর বলেন, ২৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা শুনেছি। দরকার ১১ হাজার মেগাওয়াট। এখন ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎও নেই। কুইক রেন্টালের মাধ্যমে কাদের কত টাকা দেওয়া হয়েছিল, কত টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছিল? কতটুকু বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা ছিল আর কতটুকু পেয়েছেন? কত টাকা দিয়েছেন আর কত টাকার বিদ্যুৎ পেয়েছেন তার হিসাব দিন। জনগণ বিদ্যুৎ পাবে না, কিন্তু ঋণ পরিশোধ করবে কেন?
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি যে বিএনপিকে বললেন আপনার বাড়ি ঘেরাও করতে আসলে চা খাওয়াবেন। চা খেতে গেলে যতটুকু পানি প্রয়োজন ততটুকু পানি আছে তো আপনার কাছে? জনগণ গণভবনে চা খেতে যাবে না, যাবে আপনাকে বিদায় করতে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ করে গয়েশ্বর বলেন, ‘আপনি (ওবায়দুল কাদের) বলেছেন, শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে টুস করে ফেলে দেবেন- এটা নাকি হাস্যরসাত্মকভাবে বলেছেন। আমি বলব, খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঠাট্টা করেন, কিন্তু ১৪ বছর ধরে জনগণের সঙ্গে যে ঠাট্টা-মশকরা করছেন তার প্রতিশোধ জনগণই নেবে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) উদ্দেশে বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। কোন দল নির্বাচনে আসবে, কারা আসবে না এ নিয়ে আপনার কথা বলার অধিকার নেই। আপনি এ নিয়ে কথা বলার কে? আগামী নির্বাচন এ কমিশনের অধীনে করা হবে না। শেখ হাসিনা যতদিন আছেন, আপনিও ততদিন আছেন।’
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গয়েশ্বর বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে হবে। সেই কাজটাই এখন আমাদের জরুরি। সভা-সমাবেশ নয়, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী একজন আদম বেপারী। একবার বলেন, আমরা আইএমএফের কাছ থেকে টাকা ধার নিই না, আবার পত্রিকায় দেখি আইএমএফের কাছে টাকা ধার চান। তারা সকালে এক রকম কথা বলে, আবার বিকালে অন্য রকম কথা বলে। সরকারের অবস্থা তেঁতুল গাছের মতো, যে গাছ লাগিয়ে তেঁতুল বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করবে।’
স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে স্বরণসভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, গাজীপুর জেলার সভাপতি ফজলুল হক মিলন, ঢাকা মহানগরের হাবিবুর রশিদ হাবিব, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ প্রমুখ।