চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। পরিস্থিতি যে কোনো সময় যুদ্ধাংদেহী রূপ নেওয়ার আগেই যুবকদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে তাইওয়ান। একই সঙ্গে চলছে দীর্ঘসময় ধরে বাংকারে থাকার ট্রেনিংও। অপরদিকে নাগরিকদের যুদ্ধে নামানো বা বাংকার ট্রেনিংয়ের মতো প্রতিরক্ষামূলক কোনো পদক্ষেপই এখনো নেয়নি চীন। কিন্তু কেন? বিশ্বের ৫ পরাশক্তির শীর্ষ আসন দখল করে থাকা চীন কি নিজের সমর শক্তির ওপরই শতভাগ আস্থা নিয়ে আছে? বৃহৎ এ ভূখণ্ডের দানবীয় সামরিক শক্তির সামনে তাইওয়ান কি সত্যিই নগণ্য? মার্কিন উসকানিতে চীন-তাইওয়ানের রণমূর্তিতে দুদেশের সামরিক ও জনশক্তির বিষয়টিই বারবার উঠে আসছে বিশ্বের সমর বিশারদদের মুখে। চীনের জনসংখ্যা ১৩৯ কোটি ৮০ লাখ। তাইওয়ানের জনসংখ্যা মাত্র দুই কোটি ৩৬ লাখ। জনসংখ্যার বিচারে চীন ও তাইওয়ানের কোনো তুলনাই চলে না।
প্রতিরক্ষা বাজেট : গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার, ২০২২-এর হিসাব অনুযায়ী, সামরিক খাতে চীন বিপুল খরচ করে। খুব কম দেশই এতটা খরচ করে বা করতে পারে। ফি বছর চীনের প্রতিরক্ষা বাজেট ২৩ হাজার কোটি ডলারের কাছাকাছি। সেই তুলনায় তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা বাজেট এক হাজার ৬৮০ কোটি ডলার।
সেনা সংখ্যা : চীনের সক্রিয় সেনার সংখ্যা ২০ লাখ। তাইওয়ানের এক লাখ ৭০ হাজার মাত্র। ফলে সেনা সংখ্যার হিসাবেও চীন ও তাইওয়ানের কোনো তুলনা চলে না। ওপরের ছবিটি চীনের সেনার প্যারেডের।
কার কাছে কত ট্যাঙ্ক : চীনের কাছে আছে পাঁচ হাজার ২৫০টি ট্যাঙ্ক। আর তাইওয়ানের কাছে এক হাজার ১১০টি। ফলে তুলনা অসম। ওপরে চীনের ট্যাঙ্কের ছবি।
যুদ্ধবিমান : চীনের কাছে তিন হাজার ২৮৫টি যুদ্ধবিমান আছে। তাইওয়ানের কাছে মাত্র ৭৪১টি। তবে তাইওয়ানের কাছে এফ ১৬ যুদ্ধবিমান রয়েছে।
নৌবহরের সংখ্যা : চীনের নৌবহর ৭৭৭টি। তাইওয়ানের মাত্র ১৭৭টি।
প্রশান্ত মহাসাগরে কে কত খরচ করে : ট্রেন্ডস ইন ওয়ার্ল্ড মিলিটারি এক্সপেন্ডিচার ২০২১ অনুযায়ী, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি খরচ করে যুক্তরাষ্ট্র। ৮০ হাজার কোটি ডলার। দ্বিতীয় স্থানেই আছে চীন। ২৯ হাজার কোটি ডলার খরচ করে। তাইওয়ান সেখানে খরচ করে এক হাজার তিনশ কোটি ডলার। তবে তারা সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডের থেকে বেশি অর্থ খরচ করে।
কাকে বাছবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো : যদি এ রকম পরিস্থিতি আসে, বাধ্য হয়ে কাউকে সমর্থন করতে হচ্ছে, তা হলে কাকে সমর্থন করবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো? দ্য স্টেট অব সাউথইস্ট এশিয়া ২০২২ জানাচ্ছে, লাও, কম্বোডিয়া ও ব্রুনেই নিশ্চিতভাবে চীনের দিকে যাবে। কিন্তু ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন্স, মিয়ানমারের যুক্তরাষ্ট্রের দিকে থাকার সম্ভাবনা বেশি।